ভারতীয় বিমানবাহিনী সদস্যদের হাতে এসেছে নতুন ভয়ংকর এক হাতিয়ার। আজ শনিবার দেশটির হাতে পেয়েছে অত্যাধুনিক মার্কিন হেলিকপ্টার অ্যাপাচি এএইচ ৬৪ ই। আজই ভারতের বিমানবাহিনী গাজিয়াবাদের এয়ারবেসে পৌঁছে গেছে ৪টি অ্যাপাচি হেলিকপ্টার।
মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা বোয়িং এক টুইটে চারটি হেলিকপ্টার ভারতের কাছে হস্তান্তরের কথা জানিয়েছে। এটি নিয়ে পাঁচটি ভয়ংকর অ্যাপাচি হেলিকপ্টার ভারতের সামরিক বহরে যুক্ত হলো।
সামরিক শক্তিতে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠতে নিয়মিত এমন নানান সামরিক অস্ত্র কিনছে ভারত। এবার মার্কিন হেলিকপ্টার অ্যাপাচি এএইচ ৬৪ ই হাতে পেল দেশটি। এটি বিশ্বের সর্বাধুনিক মাল্টি রোল কমব্যাট হেলিকপ্টার।
জি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে করা চুক্তির আওতায় ভারত অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার অ্যাপাচি এএইচ ৬৪ ই হাতে পেল। ২২টি অ্যাপাচি হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি করেছিল ভারত। এরই একটি মে মাসে ভারতের বিমানবাহিনীর হাতে তুলে দেয় মার্কিন কোম্পানি বোয়িং। চুক্তি মোতাবেক বাকি হেলিকপ্টারগুলো এ বছরের জুলাইয়ে ভারতের পাওয়ার কথা। শনিবার ভারত চারটি হাতে পেল।
ভারতের হাতে আসা অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের প্রথম ব্যাচ এটি। এর পরে আরও কয়েক ব্যাচে এ হেলিকপ্টার ভারতে পাঠাবে বোয়িং। শেষ পর্যায়ের অ্যাসেম্বেলিং ও যাচাইয়ের পর এই হেলিকপ্টারগুলোকে পাঠানো হবে ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তের পাঠানকোটে বিমানবাহিনীর সেনা ঘাঁটিতে।
এই হেলিকপ্টারগুলো অ্যাপাচি গার্ডিয়ান নামেও পরিচিত। এ হেলিকপ্টারগুলো সর্বাধুনিক আক্রমণাত্মক হেলিকপ্টার। এগুলোর আছে চার ব্লেডের অ্যাটাকিং কপ্টার। যেকোনো আবহাওয়ায় এসব হেলিকপ্টার হামলা চালাতে পারে। গাছের উচ্চতায় নেমে লক্ষ্যবস্তুকে চোখের নিমেষে গুঁড়িয়ে দিয়ে চলে যেতে পারে অ্যাপাচি হেলিকপ্টার। লক্ষ্যে সরাসরি আঘাত হানতে এই হেলিকপ্টারে রয়েছে নাইট ভিশন সিস্টেম।
মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্যরা প্রচুর পরিমাণে অ্যাপাচি হেলিকপ্টার ব্যবহার করেন। প্রায় ৩০০ কিলোমিটার বেগ পর্যন্ত উড়তে সক্ষম এই হেলিকপ্টারগুলো। অন্ধকারে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে এবং দ্রুত ওঠানামার ক্ষমতা এ হেলিকপ্টারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এক টানা প্রায় ৪৭৬ কিলোমিটার উড়তে পারে অ্যাপাচি।
একজন পাইলট ও গানার থাকেন হেলিকপ্টারটি পরিচালনা করার জন্য। একটি একটি অ্যাপাচি হেলিকপ্টারে থাকে থার্টি এম এম মেশিনগান। হেলিকপ্টার থেকে প্রতি মুহূর্তে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ বার গুলি ছোড়া যায়। ১৬ এজিএম-১১ এ আর হেলফায়ার-২ অ্যান্টি ট্যাংক গাইডেড মিসাইল বহন করতে পারে এই হেলিকপ্টার। এ মিসাইল দিয়ে ট্যাংক ধ্বংস করা যায়।
এ ছাড়া দুটো এআইএম-৯ সাইডউইন্ডার, চারটি এআইএম-৯২ স্টিংগার, মিস্ট্রাল ক্ষেপণাস্ত্রও বহন করতে পারে অ্যাপাচি। শত্রুপক্ষের রাডার ধ্বংস করতে পারে এসব অ্যাপাচি। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকার জন্য খুবই উপযোগী অ্যাপাচি হেলিকপ্টার।
এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের বিমানবাহিনীতে যোগ হয় চিনুক হেলিকপ্টার। একই সঙ্গে এই দুই হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি হয়েছিল। প্রথম ব্যাচের চিনুক হেলিকপ্টার পৌঁছে যায় গুজরাটের মুন্দ্রা বিমানবন্দরে।