ধর্ষণ মামলা : পরোয়ানার পরদিনই জামিন পেলেন জাপা নেতা লোটন

আদালত প্রতিবেদক

ধর্ষণ মামলা : জামিন পেলেন জাপা নেতা লোটন
ফাইল ছবি

হাইকোর্ট জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটনের বিরুদ্ধে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় চার সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন।

আলমগীর সিকদার লোটনের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন আগাম জামিনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল (২৮ জুলাই) রোববার সকালে বিচারিক আদালতে এ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পরের দিন (আজ সোমবার) তিনি হাইকোর্টে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ জামিন আবেদন মঙ্জুর করেন।

আদালতে এদিন জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। পরে আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আদালত আলমগীর সিকদার লোটনকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন।

গত ১০ জুলাই ৩২ বছর বয়সী এক নারী লেখক ঢাকার এক নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করেন। আদালত ওই নারীর জবানবন্দি নেয়ার পর অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন।

গত ২৮ জুলাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিনের আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। এরপর আদালত গ্রেফতারি পরোয়না জারি করেন তার বিরুদ্ধে। পরোয়ানা জারি করার পরের দিন তিনি হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদিনী একজন লেখিকা এবং আসামি একটি পাবলিকেশন্সের মালিক। সেই সুবাদে পূর্বপরিচিত। অতঃপর ‘সংগঠক ও সংগঠন’ রাজনৈতিক বইটি লিখতে তারা একসঙ্গে কাজ করেন। পরে আসামির নিজ প্রতিষ্ঠান ‘আকাশ পাবলিকেশন’ থেকে প্রকাশিত ‘সময়ের আয়নায় পল্লীবন্ধু’ ছবি অ্যালবামের নির্দেশনা ও অঙ্গসজ্জা হিসেবেও বাদী কাজ করেন।

ওই কাজের জন্য বাদী আসামির সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতেন। তখন আসামি বাদীকে প্রায়ই ইভটিজিংমূলক কথাবার্তা বলতেন। আসামি বাবার বয়সী ভেবে বাদী বিষয়টি এড়িয়ে যেতেন।

এছাড়া আসামি বিভিন্ন সময় ফোনে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ম্যাসেঞ্জারে বাদীর কাছে নোঙরা ছবি পাঠাতেন এবং ভিডিও কলে নোঙরা প্রস্তাব দিতেন। কাজের প্রয়োজনে আসামির কাছে যেতে হতো বলে বাদী কঠোর প্রতিবাদ করতে পারতেন না।

মামলায় বলা হয়, চলতি বছর ১ জানুয়ারি আসামির জন্মদিনে তার অনুরোধে বাদী রাজধানীর কোতোয়ালি থানার বিউটি বোর্ডিংয়ে যান। সেখানে কেক কাটার পর আসামি বাদীকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে গাড়িতে তোলেন। পথে ড্রাইভার ও তার সহযোগীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে রাত ৯টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার একটি নিরিবিলি জায়গায় থেমে গাড়িতেই বাদীকে ধর্ষণ করেন। মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। বিষয়টি কাউকে জানালে ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে পরে তাকে বাসায় পৌঁছে দেন।

আসামির কাছে নোঙরা ছবি ও ভিডিও থাকায় সে বাদীকে ব্ল্যাকমেইল করে। এরপর বিভিন্ন সময় আসামির পাবলিকেশন হাউজ ও বিউটি বোডিংয়ে একাধিকবার বাদীকে ধর্ষণ করে।

সর্বশেষ আসামি বাদীকে বিয়ে করবেন বলে ডেকে এনে গত ৩০ জুন ১২টা থেকে ২টার মধ্যে বিউটি বোডিংয়ের দোতলার একটি কক্ষে ধর্ষণ করেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে