ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার বাড়তি ঋণ নিলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ চাপের মুখে পড়তে পারে বলে মনে করে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতি নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনটি বলেছে, এবারের মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়িয়ে ধরেছে। এতে উৎপাদনশীল খাত, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত বুধবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। এতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ধরা হয়েছিল সাড়ে ১৬ শতাংশ।
অন্যদিকে সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের লক্ষ্য বাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ ধরা হয়েছে, যা গত বছর ছিল ১০ দশমিক ৯ শতাংশ।
শনিবার এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে মুদ্রানীতির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, অর্থবছরের সঙ্গে মিল রেখে এক বছর মেয়াদি মুদ্রানীতি প্রণীত হওয়ায় মুদ্রানীতি এবং বাজেট ও রাজস্ব নীতির মধ্যে সমন্বয় থাকবে। তবে উচ্চতর প্রবৃদ্ধিকে ধরে রাখতে ব্যবসাবান্ধব মুদ্রানীতি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা দরকার।
সংগঠনটি আরও বলেছে, উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন। সহজলভ্য ঋণ প্রবাহ ছাড়া কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন সম্ভব নয়। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেওয়ায় এ খাতে ঋণপ্রবাহ সংকুচিত হতে পারে, যা বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত ও বাধাগ্রস্ত করবে।
বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে গত অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারপরও বিনিয়োগের স্বার্থে এ খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কমানো সংগত নয়।
মুদ্রানীতি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে পর্যবেক্ষণে জোর দেওয়ার তাগিদও দেওয়া হয়েছে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি সুদের হার কমানোর অনুরোধও জানানো হয়। বলা হয়, জাতীয় উচ্চ প্রবৃদ্ধিকে আরও গতিশীল করার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সকল ব্যাংকে এক অঙ্কের (সিঙ্গেল ডিজিট) সুদহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এখনো প্রায় সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সুদের হার এক অঙ্কের ওপরে রেখেছে।
ব্যাংকিং খাতে নন-পারফর্মিং লোন বা খেলাপি ঋণের বিষয়টি একটি সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন যাবৎ এ দুর্বিষহ বোঝা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কাজ করছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ এবং বিনিয়োগবান্ধব করতে খেলাপি ঋণ কমানোর প্রচেষ্টা আরও বাড়াতে হবে।