ঢাকায় এডিস মশার সংখ্যা বেড়েছে ১৩ গুণ

ডেস্ক রিপোর্ট

দেশে একদিনে রেকর্ড ১৮৭০ রোগী ভর্তি
ফাইল ছবি

বর্ষা শুরুর আগে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এডিস মশার সংখ্যা যা ছিল, এখন তা ১৩ গুনেরও বেশি বেড়ে গেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য। জরিপ বলছে, বর্ষা শুরুর আগে ঢাকায় প্রাপ্তবয়স্ক এডিস মশার ঘনত্ব ছিল ৩৬টি। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪৮৭টি। বর্ষার আগে ৩ মার্চ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত জরিপে সেই ঘনত্ব ছিল ৩৬টি। আর সর্বশেষ জরিপটি হয় ১৭ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত। ঢাকা দুই সিটির ৯৮টি ওয়ার্ডের ১০০টি স্থান থেকে এই জরিপের নমুনা নেওয়া হয়।

universel cardiac hospital

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালিত জরিপে দেখা যাচ্ছে-শুধু এডিস মশার সংখ্যাই নয়, মশার লার্ভার ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। অর্থাৎ এসব লার্ভা থেকে মশা বের হলে আগামী দিনগুলোতে মশার সংখ্যা আরও অনেক বেড়ে যাবে।

গবেষণায় অধিকাংশ এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে পরিত্যক্ত টায়ারে জমে থাকা পানিতে, প্লাস্টিকের ড্রামে, বালতি, খোলা ট্যাংক ও ফুলের টবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) বিভাগ বলছে, প্রাপ্তবয়স্ক মশা ও এডিস মশার লার্ভার সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তাই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এডিস মশা বাড়ছে এটাই জরিপে দেখা যাচ্ছে। সাধারণত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এডিস মশার কারণে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থাকে। এডিস মশা কতটা নিয়ন্ত্রণে আসবে তা নির্ভর করছে নিয়ন্ত্রণমূলক কর্মকাণ্ড, মানুষের সচেতনতা, ওষুধ ছিটানোর ওপর।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি শুধু বাংলাদেশেই ভয়াবহ হয়নি, এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোলের হিসাবে, ডেঙ্গুর পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর এবং ভিয়েতনামেও।

বিগত কয়েক বছরের হিসাবে দেখা গেছে, বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি থাকে। এরই মধ্যে সরকারি হিসাবে এ বছর জুলাই মাসে আগের সব রেকর্ড ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি রোগী ছিল ১৫ হাজার ৬৫০। ২০১৮ সালে সারা বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ছিল ১০ হাজার ১৪৮। মৃত্যুর সংখ্যাও গত বছরের তুলনায় বেশি। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও রোগীর স্বজনদের সাথে গণমাধ্যম কর্মীরা কথা বলে এ বছর ৮৫ জনের মৃত্যুর খবর জেনেছে। যদিও সরকারি হিসাবে মৃত্যু ১৮ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম বলছে, দুই দিনের ব্যবধানে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা আবারও বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭১২। পরদিন তা কমে ১ হাজার ৬৮৭ হয়। শনিবার কিছুটা কমে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১ হাজার ৬৪৯। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নতুন ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৮৭০ জন। সব মিলে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৪ হাজার ৮০৪ জন। এর মধ্যে ৭ হাজার ৩৯৮ জন বর্তমানে ভর্তি আছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে