জেনেভায় নির্যাতনবিরোধী একটি কনভেনশনে যোগ দিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘অবলীলায় মিথ্যা কথা বলেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের সাহায্যার্থে সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন করার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জেনেভায় কয়েকদিন আগে মানবাধিকারের ওপরে নির্যাতনবিরোধী একটি গুরুত্বপূর্ণ কনভেনশন হয়েছে। বর্তমান সরকার ১০/১২ বছর ধরে ক্ষমতায়, কিন্তু সেখানে কোনো জবাবদিহিতা করেনি।
তিনি বলেন, কনভেনশনে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটি বাংলাদেশকে ডেকে এখানে যে নির্যাতন হয়, সে সম্পর্কে সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। সেখানে আমাদের আইনমন্ত্রী অবলীলায় মিথ্যা কথা বলেছেন। আইনমন্ত্রী বলেছেন– বাংলাদেশে কোনো গুম-খুনের ঘটনা তার জানা নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ পত্রিকায় দেখেছি– একজন সিনিয়র সাংবাদিক মুশফিকুর রহমান গুম হয়ে গেছেন। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের এমপি ছিলেন ইলিয়াস আলী। চৌধুরী আলম কমিশনার ছিলেন। তাদের এখন পর্যন্ত খুঁজে পাইনি। আমাদের ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, বিএনপির প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছেন। তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, আমরা এমন দেশে বাস করছি, যেখানে আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। সরকার নিজেদের সুরক্ষার জন্য দুর্নীতি করছে এবং দুর্নীতির টাকা দিয়ে বিদেশে বাড়ি বানাচ্ছে। যেখানে তারা বসবাসের ব্যবস্থা করছে।
- আরও পড়ুন, আগস্টের বাতাসে ষড়যন্ত্রের গন্ধ : কাদের
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল রোববার ১ হাজার ৭৬০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শুধু ঢাকায়। আর এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজারের ওপরে। অথচ মন্ত্রী যিনি দায়িত্বে আছেন, এমনকি মেয়র সাহেবরা কী বলেছেন, সেটা রিপিট করতে চাই না। আসলে এদের কোনো লজ্জা নেই। এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই তাদের জবাবদিহিতা নেই। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে যেকোনো প্রকারে ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং জনগণের অর্থকে লুণ্ঠন করা।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সংসদে তো এখন কিছুই নেই। তারা (সরকার) তাদের পছন্দমতো একটা বিরোধী দল দাঁড় করিয়ে রেখেছে। এই সরকার একেবারেই গণবিরোধী। জনগণের স্বার্থবিরোধী সরকার। মানুষের ন্যূনতম অধিকার লুণ্ঠনকারী সরকার।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।