পাকিস্তান কাশ্মীর নিয়ে চলমান সংকট নিরসনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পর এবার আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডন ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়, মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি একটি টিভি চ্যানেলকে বলেন, আমরা কাশ্মীরের বিষয়টি আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সব আইনি দিক খতিয়ে দেখে এবং সব কিছু বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ক্যাবিনেট মিটিংয়ের বিস্তারিত জানিয়ে ইমরান খানের তথ্য উপদেষ্টা ফেরদৌস আশিক আওয়ান বলেন, কাশ্মীরের বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে যাওয়ার সুপারিশ মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়কে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণহত্যা, এই দুই বিষয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে ভারতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের বিষয়ে ভারতীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে শুক্রবার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। বৈঠকে কাশ্মীরের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছে চীন।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি’র নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
লাদাখ ও কাশ্মীরকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে বিল আনা হয়। বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে সরব হলেও তাদের ঐক্যবদ্ধ বিরোধিতার অভাবে লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই কক্ষে বিলটি পাস হয়।
এ নিয়ে প্রথম থেকেই তীব্র আপত্তি জানিয়ে আসছে পাকিস্তান। এটা ভারতের একতরফা সিদ্ধান্ত, এই অভিযোগ তুলে নিরাপত্তা পরিষদের দ্বারস্থ হয় তারা। বিষয়টি জাতিসংঘে তোলার আবেদন করে পাকিস্তান।
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ মোদীর
- জঙ্গি অর্থায়ন মামলায় শাকিলাসহ ৬১ আসামির বিচার শুরু
কিন্তু এতে কাজ না হওয়ায় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি চিঠি দেন নিরাপত্তা পরিষদে। শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কার্যালয়ে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বৈঠকটি হয়।
১৯৬৫ সালের পর কাশ্মীর নিয়ে দ্বিতীয়বার রুদ্ধদ্বার বৈঠক এটি। কাশ্মীর নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠকের বিষয়টিকে তাদের কূটনৈতিক জয় হিসেবে দাবি করেছে পাকিস্তান।