আজ বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালে এইদিনে সন্ধ্যায় ৭৫ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
নিজের জন্মস্থান কলকাতায় সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় রাজ্জাকের মঞ্চ নাটকে হাতেখড়ি। ১৯৬৬ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রে তার অভিষেকের সূচনা। একই বছর জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্র (লখিন্দর) এর ভূমিকায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন তিনি।
১৯৬৪ সালে নতুন জীবন গড়তে সপরিবারে বাংলাদেশে পাড়ি জমানো অসহায় রাজ্জাক কঠোর পরিশ্রম আর সংগ্রাম করে নায়ক রাজ রাজ্জাকের উপাধি লাভ করেন। মুখ ও মুখোশ চলচ্চিত্রের পরিচালক আব্দুল জব্বার খানের সহযোগিতায় বাংলাদেশী ফিল্মে কাজ করার সুযোগ লাভ করেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম মুক্তি পায় রাজ্জাক অভিনীত ‘মানুষের মন’ ছবি। ছবিটি ব্যবসাসফল হয়। এ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে সূচনা ঘটে নায়ক রাজ্জাকের যুগ। তার পর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রথম ছবি ওরা ১১জন, ‘ছন্দ হারিয়ে গেল’, ‘অবুঝ মন’ ছবিতে অভিনয় করে রাজ্জাক হয়ে যান বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের আইকন।
দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছরের অভিনয় জীবনে বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নীচে, জীবন থেকে নেয়া, অবুঝ মন, রংবাজ, ওরা ১১জন, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, ছুটির ঘণ্টা, বড় ভালো লোক ছিল, ও আমার দেশের মাটিসহ প্রায় ৫০০টি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৬টি চলচ্চিত্রের পরিচালক রাজ্জাকের মালিকানাধীন রাজলক্ষী প্রোডাকশনের ব্যানার থেকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের কয়েক দশকের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচিত রাজ্জাক মোট পাঁচবার শ্রেষ্ঠ অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন।