ব্রেক্সিটের আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পার্লামেন্ট অধিবেশন মুলতবি রাখার পদক্ষেপ নেওয়ায় পার্লামেন্ট সদস্য এবং চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের বিরোধিতাকারীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। আদালতের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি পিটিশনে ১০ লাখেরও বেশি লোক স্বাক্ষর করেছে।
যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরজুড়ে পাঁচ সপ্তাহের এ মুলতবি সত্বেও ব্রেক্সিট নিয়ে বিতর্কের সময় পাওয়া যাবে।
কিন্তু সমালোচকরা এই সিদ্ধান্তকে ‘অগণতান্ত্রিক’ উল্লেখ করে বলেছেন, এমপিদের চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট আটকানো বন্ধ করতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জনসন পার্লামেন্ট অধিবেশন মুলতবি করার জন্য রানির কাছে আবেদন করার পর বুধবার রানি তা অনুমোদন করেছেন।
বিরোধী লেবার দলীয় নেতা জেরেমি করবিন এ সিদ্ধান্তকে ‘আমাদের গণতন্ত্রের ওপর ধাক্কা’ বলে বর্ণনা করেছেন। এমপিদের পার্লামেন্টে আইন পাস করার যথেষ্ট সময় না দিয়ে চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের দিকে ঠেলে দিতেই এটি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এই মুলতবি আদেশ বন্ধ করার চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ব্রেক্সিট-বিরোধী আন্দোলনকারী জিনা মিলার জনসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে জুডিশিয়াল রিভিউয়ের আবেদন জানিয়েছেন।
হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বারকাউ এই সিদ্ধান্তকে ‘সাংবিধানিক জুলুম’ বলে বর্ণনা করেছেন।
স্কটল্যান্ডের ফাস্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন বলেছেন, এই পরিকল্পনা ঠেকাতে আগামী সপ্তাহে এমপিদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, তা না হলে ইতিহাসে আজকের দিনটি যুক্তরাজ্যের গণতন্ত্রের জন্য অন্ধকার দিন হিসেবে চিহ্নিত হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় প্রতিবাদকারীরা ওয়েস্টমিনস্টারে জমায়েত হয়ে ‘ক্যু বন্ধ কর’ বলে শ্লোগান দেয়। এ সময় তাদের হাতে ব্রেক্সিট বিরোধী প্ল্যাকার্ড ও ইইউয়ের পতাকা ছিল।
মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে আয়োজন করা এ প্রতিবাদ পার্লামেন্টের সামনে শুরু হওয়ার পর তা ডাউনিং স্ট্রিটের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে। এখানে কয়েকজন প্রতিবাদকারী ‘বিক্ষোভ মাত্র শুরু হল, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে আরও বিক্ষোভ হবে’ বলে জানিয়েছেন।
ইতোমধ্যে সরকারি ওয়েবসাইটে পার্লামেন্ট মুলতবি না করার জন্য দাখিল করা একটি ই-পিটিশনে এক দিনেরও কম সময়ের মধ্যে ১০ লাখেরও বেশি স্বাক্ষর জমা পড়েছে।