গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকার মধ্যরাতে বিকট বিস্ফোরণে পাশাপাশি লাগোয়া দুটি রেস্তোরাঁ লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে; আহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন।
শনিবার রাত ২টার দিকে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বাংলার রাঁধুনী ও তৃপ্তি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে এ ঘটনা ঘটে বলে গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান।
আহতরা সবাই ওই দুই খাবার হোটেলের কর্মী। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মামুন বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীরা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের ধারণা করছে। দুই হোটেলে পাইপলাইনের গ্যাসের পাশাপাশি সিলিন্ডারও ছিল। তবে ঠিক কীভাবে ওই বিস্ফোরণ ঘটেছে তা তদন্ত শেষে বলা যাবে।
গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, পাশাপাশি তিন ও চার তলা দুটি ভবনের নিচতলায় ওই দুই খাবার হোটেল। দুই হোটেলের মাঝ বরাবার স্যুয়ারেজ লাইন গেছে।
‘ওই লাইন ছিল ঢাকনা দেওয়া। হতে পারে ময়লা আটকে গিয়ে সেখানে গ্যাস জমে গিয়েছিল। এর আগেও কিছুটা দূরে এই স্যুয়ারেজ লাইনেই বিস্ফোরণ হয়েছিল গত রোজায়।’
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, গভীর রাতে হঠাৎ প্রচণ্ড বিস্ফোরণে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। তার মনে হয়েছে বিস্ফোরণের উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলার রাঁধুনী হোটেল। তাতে পাশের তৃপ্তি হোটেলের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিকট ওই বিস্ফোরণের পর খাবার হোটেল থেকে ছিটকে যাওয়া ইটের টুকরোর আঘাতে মহাসড়কের উল্টো পাশের বোর্ডবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাঁচতলার কাচ ভেঙে যায়।
খবর পেয়ে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। তবে তার আগেই স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে তায়রুন্নেসা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যায়। সেখান থেকে ১৮ জনকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপালে।
গাজীপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়ার স্টেশন অফিসার মো. জাকারিয়া খান বলেন, হোটেলে বিস্ফোরণ আর আগুনের খবর পেয়ে আমরা গিয়েছিলাম। বিস্ফোরণে হোটেলের দেয়াল ধসে পড়েছে, পলেস্তরা খসে পড়েছে। তবে আগুন ছড়ায়নি।
বাংলার রাঁধুনী হোটেলের ম্যানেজার সুমন (২৬) নিজেও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাতে কাজ শেষে তারা যখন হোটেল বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই ওই বিস্ফোরণ ঘটে।
সুমন ছাড়াও আল আমীন (৩২), আরিফুল (১৮), জুবায়ের (১৬), নাজমুল (২২), জাহিদ (২৫), আলমগীর (২৭), মারুফ (১৩), মাসুদ (১৮), সুফিয়ান (২২), জাহাঙ্গীর (২০), শুকুর (১৯), রাশেদ (২২), তুহিন (২২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে মেডিকেল ফাঁড়ি পুলিশের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, মোট ১৮ জনকে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে তিনজনকে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম। অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট মো. শাহিনুর ইসলামকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটিতে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।