আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক আজ

বিশেষ প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে ছাত্রলীগের বর্তমান অবস্থা, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন, স্থানীয় নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীকে শোকজ-পরবর্তী করণীয় এবং মদদদাতাদের বিষয়সহ নানা বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। আলোচ্যসূচিতে এসব রাখা হয়েছে। দলীয় সূত্রে এসব জানা গেছে।

এদিকে স্থানীয় নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের এরই মধ্যে ১৭৭ জন বিদ্রোহী প্রার্থীকে শোকজ লেটার দেয়া হয়েছে। এ সপ্তাহ থেকে মদদদাতাদেরও চিঠি পাঠানো হবে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। তাদের শাস্তি কী হবে সেটিও নির্ধারণ হতে পারে আজকের বৈঠকে। এছাড়া দেশের চলমান বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হবে।

universel cardiac hospital

ছাত্রলীগ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে

আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক সদস্য জানান, এমন একটি মুহূর্তে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকা হয়েছে যখন ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। নতুন নেতৃত্বের সন্ধান করা হচ্ছে। তারা বলেন, বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে জোরালো আলোচনা ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এছাড়া জাতীয় সম্মেলনের দিনক্ষণ এগিয়ে এলেও কবে হবে, নাকি আদৌ হবে না- তা এখনও ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে। শনিবারের বৈঠকে এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে। কী হচ্ছে তা জানা যাবে দু-একদিনের মধ্যে। আর পুরো বিষয়টি দেখছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এদিকে আওয়ামী লীগের চার নেতার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতারা কথা বলার সুযোগ পেলেও কার্যত তাদের পাশে এখন কেউ নেই। ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দেয়ার খবর শুনে শোভন-রাব্বানী থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নেতাদের বড় একটি অংশ।

শেখ হাসিনার উদ্দেশে গোলাম রাব্বানীর চিঠি

এ অবস্থায় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উদ্দেশে একটি চিঠি লিখেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিটি পৌঁছে দিতে তিনি একজন জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতার হাতে সেটি দিয়েছেন। ওই চিঠিতে রাব্বানী লেখেন, ‘আপনি মুখ ফিরিয়ে নিলে যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।’ যেখানে তিনি নিজেদের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। পাশাপাশি তাদের বিষয়ে যেসব অভিযোগ এসেছে তার থেকে গুরুতর তিনটির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বিস্তারিত লিখেছেন। ছাত্রলীগের প্যাডে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা চিঠির সত্যতা স্বীকার করলেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তা পৌঁছেছে কিনা সেই বিষয়ে রাব্বানী নিশ্চিতভাবে কিছু জানাতে পারেননি।

৭ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় ছাত্রলীগ নিয়ে কথা উঠলে কমিটি ভেঙে দেয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা। বিষয়টি নিয়ে পরদিন থেকে সারা দেশে আলোচনার ঝড় ওঠে।

ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ মনোভাব জানার পর সংগঠনটির পরবর্তী নেতৃত্বে কারা আসছেন- সেই আলোচনা এখন সর্বত্র। বর্তমান কমিটির মেয়াদ আরও ১০ মাস রয়েছে। তাই আগাম সম্মেলন হবে, নাকি সম্মেলন ছাড়াই নতুন নেতৃত্ব আসবে সেই আলোচনাও রয়েছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, আপাতত সম্মেলনে না গিয়ে নতুন নেতৃত্বের কথা ভাবা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত করা হতে পারে। দলের হাইকমান্ড এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। এক্ষেত্রে পারিবারিক ঐতিহ্যের পাশাপাশি সংগঠন পরিচালনায় দক্ষতাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেয়া হবে। বঞ্চিত নেতাদের জীবনবৃত্তান্তও নতুন করে পর্যালোচনা করা হবে।

২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার পর ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সম্মতিতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে