জিএস থেকে পদত্যাগ চাওয়ায় ভিপি নুরকে রাব্বানীর হুঁশিয়ারি

ক্যাম্পাস প্রতিবেদক

ভিপি নুর ও জিএস রাব্বানী
ভিপি নুর ও জিএস রাব্বানী। ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। তবে এর উত্তরে ষড়যন্ত্র হলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জিএস গোলাম রাব্বানী।

আজ সোমবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে উভয় নেতা গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।

ভিপি নুরের দাবি, ডাকসুর সভাপতি চাইলে নৈতিক স্খলনের দায়ে যে কাউকে বরখাস্ত করতে পারেন। ইতিমধ্যে অনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং অবৈধ আর্থিক লেনদেনের দায়ে গোলাম রাব্বানীকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ যদি এ বিষয়ে আপসহীন হয় তাহলে ডাকসু কেন পারবে না?

এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান বলেছেন, কোনো ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছা বা একক কোনো বিষয়ে নয়, ডাকসু চলবে এর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী।

এদিকে ডাকুসর জিএস গোলাম রাব্বানীর জানিয়েছেন, ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তিনি সংগঠনের (ছাত্রলীগ) পদ হারিয়েছেন। এবার যদি তার ডাকসুর পদ নিয়ে ষড়যন্ত্র হয় তাহলে এর দাঁতভাঙা জবাব দেবেন। প্রতিপক্ষকে তিনি এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

ভিপি নুরুল হক নুর গণমাধ্যমকে বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সকল পথের মানুষই ধারণ করেন। সেখানের ছাত্র সংসদে একজন দুর্নীতিপরায়ণ লোক, যাকে নৈতিক স্খলনের দায়ে বাদ দেওয়া হয়েছে তিনি ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন এটা মেনে নেওয়া যায় না।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র প্রতিনিধিরা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আইডল বা রোল মডেল হবেন। কিন্তু তারাই যদি এই ধরনের বিতর্কিত কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে স্বপদে বহাল থেকে যান, তাহলে তা সারাদেশের ছাত্রদের জন্য একটি খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যেখানে তার দল (আওয়ামী লীগ) ব্যবস্থা নিতে পারল, তাহলে আমরা কেন নিতে পারব না?

ডাকসুর সভাপতি চাইলে যে কাউকে বরখাস্ত করতে পারেন উল্লেখ করে ভিপি নুর আরও বলেন, যেহেতু ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে এই ক্ষমতা দেওয়া আছে তাই তিনি চাইলে যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। প্রয়োজনে তিনি ডাকসু ভেঙেও দিতে পারেন। আবার কাউকে বরখাস্ত করতে পারেন। কিন্তু তার উচিত ছিল এ ঘটনা যখন গণমাধ্যমে আসে, তখন সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু, তার সদিচ্ছার অভাবে তিনি তা নিতে পারেননি। আমাদের পক্ষ থেকে উপাচার্যকে মৌখিকভাবে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কিন্তু, তিনি আমাদের বলেছেন ডাকসুর গঠনতন্ত্রে যেভাবে আছে সেভাবে দেখবেন।

এ বিষয়ে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের বিষয়টা আমাদের দলীয় অভ্যন্তরীণ বিষয়। যেখানে আমি শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি, সেখানে আমার পদত্যাগ চাওয়াটা হলো গণমাধ্যমকে আকৃষ্ট করা।

নিজেকে আইনজীবী দাবি করে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোনো দালিলিক প্রমাণ এখন পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি। আমি আইনের ছাত্র এবং একজন লইয়ার হিসেবে যেটা জানি কোনো প্রমাণ ছাড়া কাউকে অপরাধী বলা যাবে না। ডাকসু থেকে আমার পদত্যাগের দাবিটি অবান্তর।

এদিকে ডাকসু থেকে গোলাম রাব্বানীকে অপসারণ করতে দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এ দাবির কথা জানান তারা। একইসঙ্গে পুনরায় ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার দাবিও জানান তারা।

এদিকে ৩৪জন শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তির প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের বহিষ্কার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের সঙ্গেও একাত্মতা প্রকাশ করেন তারা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে