দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কথা জানান।
কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠা জাবি উপাচার্যের (ভিসি) পদত্যাগের দাবির বিষয়টিকে সরকার কীভাবে দেখছে- জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগ কী কারণে, নৈতিক স্খলন, সেটা যদি তদন্ত করে প্রমাণ হয়, তিনিও কোনো আইনের ঊর্ধ্বে নন। তিনি যদি কোনো অন্যায় করেন, এখানে যদি তার কোনো অপকর্মের সংশ্লিষ্টতা থাকে, তদন্তে যদি এটা প্রমাণিত হয়, তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জাবি ভিসিকে পদত্যাগ করতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের দাবির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল তো সবার পদত্যাগ দাবি করছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছেন। তিনি নিজেই নিজের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তিনি নির্বাচনে জিতেও পদত্যাগ করেছেন। আবার কথা রাখতে পারেননি, ওই শূন্য জায়গায় নিজেই আরেকজনকে মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই দ্বিচারিতায় তাদের ভালো ভালো কথারও দাম নেই। তারা নিজেরা বলে একটা, করে আরেকটা। তারা নিজেরাই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। নিজের দলের যখন গণতন্ত্রের সংকট তারা দেশের গণতন্ত্র নিয়ে যখন কথা বলে তখন সাধারণ মানুষ বিষয়টিকে হাস্যকরই মনে করবে। এ ছাড়া অন্য কিছু মনে করার কারণ নেই।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম ধাপের ৪৫০ কোটি টাকার মধ্যে ২ কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেয়া হয়- এমন খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের এ অভিযোগ তদন্তসহ তিন দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু হয়।
ইতোমধ্যে কমিশন বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে অপসারণ করা হয়েছে।
উপাচার্যের দাবি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগকে কোনো টাকা দেননি, ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তার কাছে কমিশন চেয়েছেন।
সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের পক্ষ থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অভিযোগ তদন্ত করতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) দায়িত্ব দেয়া হবে। এ জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে ছাত্রলীগের পদ হারানো সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে জানা যায়, আলোচিত এক কোটি টাকা শাখা ছাত্রলীগকে ঈদ সালামি হিসেবে দেন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম।