যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে ধরতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় র্যাব অভিযান চলাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে বিতর্কিত এ নেতার গুলশানের বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছে র্যাব।
আজ বুধবার দুপুরের পর গুলশান ২ নম্বরে ৫৯ নম্বর সড়কে খালেদের বাসা এবং ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান শুরু করেন র্যাব সদস্যরা।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম সাংবাদিকদের বলেন, খালেদ ভুঁইয়াকে ধরতে তার বাড়ি ঘিরে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া জুয়া চলছে এমন গোপন খবরের ভিত্তিতে ফকিরাপুলে ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালানো হচ্ছে।
ইয়ংমেনস ক্লাব থেকে ১৪২ জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, আটকদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় যুবলীগ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক সূত্র জানায়, যুবলীগ প্রসঙ্গে বৈঠকে আলোচনার সূত্রপাত ঘটান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক।
বৈঠকের এজেন্ডায় উল্লেখ থাকা শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, দল সাড়ম্বরে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন করতে চায়। কিন্তু শেখ হাসিনা জন্মদিন পালন নিয়ে অনীহা প্রকাশ করলে নানক যুবলীগের শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন।
পরে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এ কথা উল্লেখ করে বলেন, শনিবার যুবলীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং আলোচনাসভা করেছে। তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা বলেন, চাঁদাবাজির টাকা বৈধ করতে মিলাদ মাহফিল করা হয়েছে। নিজের জন্য এমন মিলাদ মাহফিল তিনি চান না। এর পর যুবলীগ নিয়ে তার কাছে আসা নানা অভিযোগ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবলীগের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা (ঢাকা মহানগর যুবলীগের একটি অংশের সভাপতি) ক্রসফায়ার থেকে বেঁচে গেছেন। আরেকজন এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন। সদলবলে অস্ত্র নিয়ে ঘোরেন। এসব বন্ধ করতে হবে। যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে, তখন কেউ অস্ত্র নিয়ে বের হয়নি, অস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিবাদ করেনি। যখন দলের দুঃসময় ছিল, তখন কেউ অস্ত্র নিয়ে দলের পক্ষে অবস্থান নেয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, টানা তিনবার সরকারে আছি। অনেকের অনেক কিছু হয়েছে। কিন্তু আমার সেই দুর্দিনের কর্মীদের অবস্থা একই আছে। যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেন, তারা সাবধান হয়ে যান- এসব বন্ধ করুন।
দলীয় পদ ও সরকারের দায়িত্বশীল পদে আসীন ব্যক্তিদের আত্ম-অহমিকা ও ক্ষমতার জোরে অর্থ ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
অস্ত্রবাজ-চাঁদাবাজদের হুঁশিয়ার করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেণ, তারা সাবধান হয়ে যান- এসব বন্ধ করুন। তা না হলে যেভাবে জঙ্গি দমন করা হয়েছে, একইভাবে তাদেরকেও দমন করা হবে।