‘নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেওয়া হবে কাঁটাতারের বেড়া’

বিশেষ প্রতিবেদক

আসাদুজ্জামান খান কামাল
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি

নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, কানাডার রাষ্ট্রদূত বেনোয়েট প্রেফনটেন, জাতিসংঘের প্রতিনিধি ও কয়েকটি এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়ে আমাদের নতুন কোনো চিন্তা ভাবনা আছে কিনা তা জানতে চেয়েছেন তারা। তারা আরও জানতে চেয়েছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বড় বড় কাঁটাতার দিয়ে প্রাচীর নির্মাণ করছি কিনা। সেটা কী কোনো জেলখানা হবে কিনা সেটাও জানতে চেয়েছেন। আমরা বলেছি পৃথিবীর অনেক দেশেই শরণার্থীরা যেভাবে আছেন আমরাও সেভাবেই এটি করব। তারা যাতে ছড়িয়ে যেতে না পারে। আমাদের দেশের মূল নাগরিকদের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা রোধে এই প্রচেষ্টা।

মন্ত্রী বলেন, আমি প্রতিনিধিদের বলেছি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত যেতে আমরাও কাজ করছি, আপনারাও কাজ করছেন। তবে বারবার মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার পরও তারা তাদের নাগরিককে ফেরত নিচ্ছে না। প্রতিটি মুহূর্তেই তাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে প্রতিকূল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। জীবনের নিরাপত্তা ও অন্যান্য নিরাপত্তা পাবে না ভেবে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যেতে চাচ্ছে না। এটা নিয়ে আমরা প্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।

তিনি বলেন, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে রয়েছে। আমাদের হিসাব অনুযায়ী এখন কমবেশি ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রোহিঙ্গারা সম্প্রতি যে সমাবেশ করেছে সেই সমাবেশের বিষয়ে কূটনীতিকরা জানতে চেয়েছিলেন। আমরা বলেছি, তাদের বেঁচে থাকার যে আকুতি তারা এই সমাবেশের মাধ্যমে গোটা বিশ্বকে জানানোর চেষ্টা করেছে, আমরাও মনে করি তারা যথার্থই করেছে। আমরা এই সমাবেশকে নেগেটিভলি নিচ্ছি কিনা সে বিষয়ে তারা আমাদের প্রশ্ন করেছে। আমরা বলেছি, নেগেটিভ চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। তারা বেঁচে থাকার জন্য যেটা করেছে সেটা যৌক্তিক।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের একজন পুলিশ ও যুবলীগের নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রায় দেখি বাড়াবাড়ি, হইচই। রাতে নিরাপত্তা বাহিনী রাস্তা ছাড়া কোথাও টহল দিচ্ছে না। সেজন্য ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভিসহ বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করব, যাতে তাদের অবস্থান সবসময় মনিটরিং করতে পারি। রোহিঙ্গারা এখনও তাদের ল্যান্ডে যাতায়াত করে ইয়াবা নিয়ে আসছে। যাতে করে কোনো টেরোরিস্টের জন্ম না হয়, মানবপাচার না হয় সেজন্য তাদের কাঁটাতারের মধ্যে নিয়ে আসতে চাইছি। মিয়ানমার মাঝে মাঝে বলছে সেখানকার সন্ত্রাসীরা এখানে এসে ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে