বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনদের চোখের জলে তিন দফা জানাজা শেষে সমাহিত করা হয়েছে। যিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতনে রোববার রাতে মারা যান।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে তার তৃতীয় জানাজা হয়। এরপর কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে তাকে দাফন করা হয়। দাফনের সময় উপস্থিত জনতা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
দাফনের আগে জানাজায় অংশ নেওয়া কয়েক হাজার মানুষের কাছে আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্ তার সন্তানের জন্য ক্ষমা চান। উপস্থিত জনতা তার সন্তান শহীদ হয়েছে বলে আখ্যায়িত করেন।
জানাজার আগে গ্রামবাসী খুনিদের বিচার দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে ঈদগাহ ময়দানের পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বার্ষিক ক্যালেন্ডারের উল্টোপিঠে বিভিন্ন রং দিয়ে স্লোগান লিখেছেন তাঁরা। ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় খুনিদের ঠাঁই নাই/শেখ হাসিনার বাংলায় খুনিদের ফাঁসি চাই’ এ ধরনের নানা স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে রায়ডাঙ্গা গ্রাম। দাফনের পরও গ্রামবাসী এখনো রাস্তাজুড়ে বিক্ষোভ করছেন।
এর আগে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আবরারের মরদেহবাহী গাড়িটি কুষ্টিয়ার পিটিআই রোডস্থ বাড়িতে পৌঁছায়। সেখানে সকাল সাড়ে ছয়টায় আল হেরা জামে মসজিদে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ফাহাদের লাশ নিয়ে যাওয়া হয় কুমারখালী ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গায়।
- আবরার হত্যা: বুয়েট ছাত্রলীগের ১০ নেতা-কর্মী পাঁচ দিনের রিমান্ডে
- আবরার হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল বুয়েট
- আবরার হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদলের ২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
- ৬ ঘণ্টা ধরে নির্যাতন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড: আবরারের বাবা
গত রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, ওই রাতেই হলটির ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন।
আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় হত্যা একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্।