মানিলন্ডারিং আইনের একটি মামলায় মোহাম্মদপুরের আলোচিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
আজ শনিবার ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসী এ রিমান্ডের আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরির্দশক গিয়াস উদ্দিন তাকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের পক্ষে মো. মুরাদুজ্জামান রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করে বলেন, আসামি অসুস্থ। যা উদ্ধার হবার হয়ে গেছে। রিমান্ডে নিয়ে কোনো লাভ হবে না। তাই রিমান্ড বাতিল করে জামিন মঞ্জুর হওয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ রিমান্ডের পক্ষে এবং জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে দশ কার্য দিবসের মধ্যে রিমান্ড কার্যকর করার আদেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার ভোরে র্যাবের একটি বিশেষ টিম মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গুহ রোডের হামিদা আবাসিক গেস্ট হাউসের সামনে থেকে মিজানকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময় তার কাছে দুই লাখ টাকা এবং চার রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্থল জব্দ করা হয়। র্যাবের দাবি, মিজান শ্রীমঙ্গল থেকে পাশের দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন।
পরে তাকে ঢাকায় আনার পর বিকাল চারটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তার মোহাম্মদপুর আওরঙ্গজেব রোডের বাসা ও লালমাটিয়ার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমকে নিয়ে তল্লাশি চালায় র্যাব।
তল্লাশির সময় বাসায় এক কোটি টাকার এফডিআর এবং ছয় কোটি ৭৭ লাখ টাকার বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেক জব্দ হয়। এছাড়া গত ১০ অক্টোবর ব্যাংক থেকে নগদ ৬৮ লাখ টাকা উত্তোলন করেন কলে সারওয়ার আলম জানান।
মিজানের বিরুদ্ধে হত্যা, বিহারি ক্যাম্পে মাদকের কারবার, চাঁদাবাজি, জমি দখল, টেন্ডারবাজি, প্রভাব বিস্তারসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে একাধিক মামলাও রয়েছে। তিনি মোহাম্মদপুরের বাসিন্দাদের কাছে ত্রাস হিসেবে পরিচিত। তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের চলমান ‘শুদ্ধি অভিযানের’ মধ্যে হঠাৎ আত্মগোপন করেন মিজান।
- কাউন্সিলর ‘পাগলা মিজানের’ বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা
- বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার জন্য আন্দোলন শিথিল
১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট মধ্যরাতে ফ্রিডম পার্টির সদস্য কাজল ও কবিরের নেতৃত্বে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
ওই ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় মামলার চার্জশিটে মিজান পরিকল্পনাকারীদের একজন হিসেবে আসামি উল্লেখ করা হয়। হামলাকারীদের মধ্যে মিজানের ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমানও ছিলেন। ১৯৯৫ সালে দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে মারা যান মোস্তাফিজুর।