শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীদের কারসাজিতেই বাড়ে পেঁয়াজের দাম!

বিশেষ প্রতিবেদক

পেঁয়াজ
ফাইল ছবি

ভারত রফতানি বন্ধ করলেও মিয়ানমার ও মিসর থেকে আসছে পেঁয়াজ। এরপরও দাম কমছে না। উল্টো দফায় দফায় বাড়ছে।

বৃষ্টির অজুহাতে শুক্র ও শনিবার দুই দফায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।

universel cardiac hospital

তাদের অভিমত, ভারত রফতানি বন্ধ করার পর পেঁয়াজের দাম এক লাফে অনেক বেড়েছে। এরপর সরকারের তৎপরতায় মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। এতে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে।

এ পরিস্থিতিতে নতুন করে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। সংশ্লিষ্টরা যদি শ্যামবাজারে অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে জরিমানা করে, তাহলে দাম কমে যেতে পারে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার খবরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সেঞ্চুরিতে পৌঁছে দেশি পেঁয়াজের কেজি। খুচরা পর্যায়ে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হতে থাকে। এরপর বেশ কিছুদিন পেঁয়াজের দাম অনেকটাই স্থির ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে শুক্র ও শনিবার দুই দফায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

আজ শনিবার ঢাকার সব থেকে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিসর থেকে আসা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা, যা শুক্রবার ছিল ৮০-৯০ টাকার মধ্যে। শুক্রবারের আগে ছিল ৬০-৭০ টাকা কেজি।

মিসরের পেঁয়াজের পাশাপাশি বেড়েছে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকা, যা শুক্রবার ছিল ১০০-১১০ টাকা। শুক্রবারের আগে ছিল ৭৫-৮০ টাকা। শুক্রবারের আগে ৬০-৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়েছে ৮০-৮৫ টাকা।

এদিকে খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। শুক্রবারও এই দামেই বিক্রি হয় দেশি পেঁয়াজ। তবে একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে আমদানি করা পেঁয়াজ। ভালো মানের আমদানি করা পেঁয়াজ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা, যা শুক্রবার ছিল ৮০-৯০ টাকা।

শ্যামবাজারের সোহেল স্টোরের মালিক বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। এখন দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। আমদানি করা ভারতীয় ও মিসরের পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। শুক্রবার দাম আরেকটু কম ছিল। বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসলে দাম কমতে পারে। তার আগে দাম কমার খুব একটা সম্ভাবনা নেই।

রামপুরার ব্যবসায়ী খায়রুল বলেন, বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার শ্যামবাজার থেকে যে পেঁয়াজ ৮০ টাকা কেজি কিনেছি, এখন তা ১১০ টাকা। সামনে হয়তো আরও বাড়তে পারে। কিন্তু কিছুদিন পরই বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসবে। এ পরিস্থিতিতে পেঁয়াজের দাম বাড়ার যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ নেই। মূলত শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীদের কারণেই দাম বাড়ছে। শ্যামবাজারে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নিলেই দেখবেন দাম কমে গেছে।

রামপুরার আরেক ব্যবসায়ী সবুর বলেন, এখন পেঁয়াজ নিয়ে যে খেলা হচ্ছে, তার সবকিছু হচ্ছে শ্যামবাজার থেকে। শ্যামবাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দেখবেন সব ঠিক হয়ে গেছে।

কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী নোয়াব আলী গণমাধ্যমকে বলেন, শুক্র ও শনিবার দুই দফা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আজ (শনিবার) পেঁয়াজের মণ কেনা পড়েছে চার হাজার ৪৬০ টাকা। গতকাল ছিল চার হাজার ২৬০ টাকা। অর্থাৎ একদিনে পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি ২০০ টাকা বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় এই দাম বাড়তে পারে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে