‘কণ্ঠ’ দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান অভিনীত সিনেমা। ভারতীয় বাংলা এই সিনেমাটি চলতি বছরের ১০ মে কলকাতায় মুক্তি পায়। দর্শকমহলে প্রশংসিত হওয়ার পাশাপাশি বেশ ব্যবসাসফলও হয় সিনেমাটি। এটি প্রযোজন করেছে ভারতের উইন্ডোজ প্রোডাকশন হাউজ।
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায় জুটির পরিচালনায় ‘কণ্ঠ’ বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে বলে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজের মাধ্যমে জানান জয়া আহসান। তবে কবে সিনেমাটি বাংলাদেশে মুক্তি পাবে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি দুই বাংলার নন্দিত এই অভিনেত্রী।
জয়ার স্ট্যাটাসের কদিন বাদেই জানা গেলো- আগামী ৮ নভেম্বর বাংলাদেশের মুক্তি পাচ্ছে ‘কণ্ঠ’। সাফটা চুক্তির আওতায় সিনেমাটি বাংলাদেশে প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে। ৮ নভেম্বর আমদানিকৃত প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস টেলিফিল্মের তত্ত্বাবধানে দেশের ১০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে এই সিনেমা।
এতে রমিলা চৌধুরী চরিত্রে অভিনয় করে ভারতের দর্শকমহলে বেশ প্রশংসিত হন বাংলাদেশী অভিনত্রী জয়া আহসান। ‘কণ্ঠ’ মাত্র ১১ দিনেই পশ্চিমবঙ্গে আয় করে ২ কোটি রুপী। এই মন্দা বাজারে ১০০ তম দিন পূর্ণ করা ‘কণ্ঠ’ শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, মুক্তি পেয়েছে দিল্লী, মুম্বাই, পুনে, আহমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদে।
পাশাপাশি লন্ডনসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬টি শহরে মুক্তি পেয়ে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান উইন্ডোজ এর আগে অলটাইম ব্লকবাস্টার সিনেমা হিসেবে বেলাশেষে, প্রাক্তন, পোস্ত, হামি উপহার দিয়েছিল। তবে বিদেশে আয়ের দিক থেকে ‘কণ্ঠ’ অতীতের সব রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।
মালয়ালাম ভাষাতেও ‘মেরি আওয়াজ সুনো’ নামে নির্মিত হচ্ছে ‘কণ্ঠ’।
পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, শুধুমাত্র ব্যবসায়িক সাফল্য নয়, ‘কণ্ঠ’ ছিল আমাদের জন্য একটি অভিযান। বিখ্যাত টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতাল আমাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে জানিয়েছে, প্রত্যেক পরিবার, ডাক্তারদের বাধ্যতামূলকভাবে ‘কণ্ঠ’ দেখা উচিত। তারা ইতিমধ্যেই ইউনিসেফ, ইউনেস্কো, ডব্লিউ এইচ ও, শ্রীলংকা, নেপালে সিনেমাটি প্রদর্শনের জন্য পরামর্শ দিয়েছে। খুব শিগগিরই ইউনিসেফে প্রদর্শিত হবে ‘কণ্ঠ’।
তিনি বলেন, এর বাইরে ‘কণ্ঠ’ কেন্দ্র করে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে তৈরি হচ্ছে ‘কণ্ঠ’ ক্লাব। যারা কণ্ঠনালীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে আড্ডা-আলোচনা, বিনোদনের ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলাই এই ক্লাবের উদ্দেশ্য।
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, কোনো রোগই যে শেষ কথা হতে পারে না, জীবনীশক্তি বাঁচিয়ে রাখলে যে সবকিছুর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা যায়- সে গল্পটিই বলার চেষ্টা করা হয়েছে ‘কণ্ঠ’তে। আমার বাবা বরিশালের মানুষ। তাই খুব ভালো লাগছে, বাংলাদেশের মানুষের কাছে ‘কণ্ঠ’ পৌঁছে যাচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের মেয়ে জয়া আহসান এই সিনেমায় কতটা ভালো অভিনয় করেছেন, তা না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবেন না। জয়াকে নিয়ে বাংলাদেশের মতো আমরাও ভীষণভাবে গর্বিত।
তিনি বলেন, কারণ আমার পরিচালনায় জয়া অভিনয় করেছে, আমি জয়ার সঙ্গে পর্দা ভাগ করেছি। ‘কণ্ঠ’ মুক্তি উপলক্ষে আমার মা, স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি, দিদি, নন্দিতা রায়, তার দিদি, প্রযোজনা সংস্থা উইন্ডোজের পুরো পরিবার বাংলাদেশে আসছি। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশে আমাদের যারা শুভাকাঙ্খী-অনুসারী আছেন, তারা এ সিনেমাটি দেখে তাদের সুচিন্তিত মতামত জানাবেন।
জয়া আহসান বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ’কণ্ঠ’ মুক্তি পাচ্ছে আমার দেশে। এই সিনেমায় বাংলাদেশেরই একজন হিসেবে অভিনয় করেছি। যারা ভালো সিনেমা দেখতে চান, বিশেষ করে যারা আরজে কিংবা শিল্প-সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করেন এবং বিশেষ করে যারা জীবনের কাছে নতুন অর্থ খুঁজছেন, বেঁচে থাকার নতুন অবলম্বন খুঁজছেন, তারা প্লিজ ’কণ্ঠ’ দেখতে আসবেন।