দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসনের মুক্তি চেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না। আমাদের রাস্তায় নামতে হবে, আন্দোলন করতে হবে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার বিকালে জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত বোর্ডের প্রধান বলেছেন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। এটাও বলেছেন, এখন তিনি যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারেন। বাসায়ও যেতে পারেন আবার যেখান থেকে এসেছেন সেখানে যেতে পারেন। আবার বলেছেন, হায়াত-মওত আল্লাহর ইচ্ছা। এই কথার অর্থ কী? পরিষ্কার জানতে চাই-খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন? তাদের পরিষ্কার করে বলতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া কোনো মামলায় সাজা পাননি। রাজনৈতিক কারণে, প্রতিহিংসার কারণে সাজানো মামলায় তাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। অনতিবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে, তার সিদ্ধান্তে তাকে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
ফখরুল বলেন, সরকার বলছে, জনগণ তাদের সাথে আছে। তাহলে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করেন। দেখেন জনগণ কাদের সাথে আছে?
ক্যাসিনোর প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা বলেছিলেন এগুলো আইওয়াশ নয়। আইওয়াশতো বটেই, গত ৩০ তারিখের নির্বাচনে ২৯ তারিখ রাতেই তো লুট করে নিয়েছেন। এখন ক্যাসিনোর ছোটখাটো দুই-একজনকে ধরে দেখাচ্ছেন আমরা শুদ্ধি অভিযান করছি। এই শুদ্ধ অভিযান প্রমাণিত করে তারা শুদ্ধ নন, পরিশুদ্ধ নন তাদের শুদ্ধি হওয়ার প্রয়োজন আছে।
রোহিঙ্গা সংকটের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ দুই বছর হতে চলছে, একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠাতে পারেনি সরকার। আসামে বসবাসকারী বাঙালিদের বলা হচ্ছে-এরা সবাই বাংলাদেশি। ভারতের মন্ত্রীরা বলছেন, সবাইকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, ১৯৭১ সালের পর কোনো বাংলাদেশি ভারতে যায়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকি আমরা। আপস করার চেষ্টা করি। আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়েছি। তাহলে কেন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারব না, সেটা আমার বুঝে আসে না।
যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকত উল্লাহ বুলু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।