হুন্ডির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাঠাতেন কমিশনার মঞ্জু

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাউন্সিলর ময়নুল হক মঞ্জু
কাউন্সিলর ময়নুল হক মঞ্জু

যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে হুন্ডির মাধ্যমে চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অর্থ পাঠাতেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ময়নুল হক মঞ্জু। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে থেকে এই তথ্য জানতে পেরেছে র‌্যাব।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মঞ্জুর অফিসে তল্লাশি চালিয়ে দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, বিপুল ইয়াবা, গাঁজা ও বিভিন্ন মাদক উদ্ধার করে র‌্যাব। অভিযান শেষে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শফিউল্লাহ বুলবুল।

তিনি জানান, ‘মঞ্জুর বিরুদ্ধে আগের দুটি মামলা আছে। এছাড়া গতকাল (বুধবার) তার বিরুদ্ধে আট কোটি টাকার চাঁদাবাজির একটি মামলা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছে তিনি মার্কেটে চাঁদাবাজি, দখলবাজি করে আসছিলেন। অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে হুন্ডির মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে পাঠিয়েছে। একজন জনপ্রতিনিধি আইন বহির্ভূতভাবে কোনো অর্থ অবৈধভাবে বিদেশে প্রেরণ করতে পারে কি-না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তার কার্যালয় থেকে যেসব অবৈধ অস্ত্র ও মাদক পেয়েছি। মঞ্জু দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে চাঁদাবাজির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেছে। এছাড়া তিনি মাদক সেবন ও কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত। তার এসব অবৈধ কাজকর্ম আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর নজরে আসলে দুপুরে নিজ কার্যালয় থেকে র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। অস্ত্র ও মাদকসহ তার বিরুদ্ধে বিকালে পৃথক মামলা করা হবে।’ এ সময় তার গাড়ির চালক সাজ্জাদকে আটক করা হয়।

বাসায় তল্লাশি চালানোর কথা জানিয়ে শফিউল্লাহ বুলবুল বলেন, ‘আমরা তার বাসায় অভিযান চালাচ্ছি। যদি কিছু পাই তাহলে আপনাদের জানানো হবে।’

এত অভিযোগ থাকার পরও তাকে গ্রেপ্তারে এত সময় লাগলো কেন এমন প্রশ্নে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তাকে শুধু গ্রেপ্তার করলেই হবে না। গ্রেপ্তার পরবর্তী মামলা চালানোর মতো সাক্ষী থাকতে হবে। এসব কারণে আমরা যথাসময়ে তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাতে পারিনি। কিন্তু এখন সঠিক সময় আসায় তাকে গ্রেপ্তার করেছি।’

কাউন্সিলর মঞ্জু দেশের বাইরে কী পরিমাণ টাকা পাচার করেছেন জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন আমরা এটা বলতে পারব না। সিআইডি এবং দুদক তদন্ত করবে।’

মঞ্জুর আয়ের উৎস সম্পর্কে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, ‘মূলত চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও দখলবাজির মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছেন’

যে বাসাটিতে কমিশনার মঞ্জু বসবাস করছেন সেটিও দখল করা বলে যে অভিযোগ উঠেছে এমন প্রশ্নে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা তদন্তের বিষয়।’ তবে তার কয়টা বাড়ি আছে সে বিষয় নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে