দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের যেন কারো কাছে হাত পাততে না হয় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এ লক্ষে সমবায় আইন এবং সমবায় ব্যাংককে সময়োপযোগী করে গড়ে তোলার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় সমবায় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কৃষি জমিতে যেন অধিক ফসল উৎপাদিত হয়, কোনোদিন কারও কাছে যেন হাত পাততে না হয় সেজন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জাতির পিতা বলতেন, ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। এ দেশের মানুষ কারও কাছে হাত পাতবে না। নিজস্ব অর্থায়নে ৯০ ভাগ কাজ করা হচ্ছে। বাজেট সাতগুণ বৃদ্ধি করেছি। এটা ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি।
তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে আধুনিক সমবায় গড়ে তোলার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। দেশে উৎপাদিত পণ্য সমবায় সমিতির মাধ্যমে বিপণনের আহ্বান জানান তিনি।
সবার স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সুযোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের বাড়ি আছে, তাদের কোনো জমি হয়তো চাষ হয় না, পুকুর পড়ে থাকে। এর সবটুকুকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে প্রত্যেক বাড়ির মালিকরা যেন নিজেরা উপার্জন করতে পারে সেই লক্ষ্যে আগে ছিল ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প, এখন নাম পরিবর্তন করে দিয়েছি- ‘আমার বাড়ি, আমার খামার’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের চাষ উপযোগী জমি সীমিত কিন্তু গবেষণার মাধ্যমে ফসলের উন্নত জাত উদ্ভাবন করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়েছে। খাদ্য, তরি-তরকারি, মাংস, মাছ, ডিম সব উৎপাদনেই আমরা অগ্রগামী। সেগুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হলে সমবায়ের ভিত্তিতে করতে হবে। সমবায়ের ভিত্তিতে এসব করলে অপচয় কম হবে, বাজারজাত হবে পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলা যাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, চাষের পরে উৎপাদিত ফসলের পণ্য ভাগ হবে তিন ভাগে।
দেশজুড়ে এক লাখ ৭৫৪ হাজার সমবায় সমিতি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শহরের মানুষ যে ধরনের সুবিধা পায় পল্লির মানুষেরাও আগামীতে সেসব সুবিধা পাবে। গ্রামে বসেই যেন দেশে-বিদেশে ব্যবসা করতে পারে সেই সুবিধা করে দিচ্ছি। নিজ গ্রামে বসে অর্থনৈতিকভাবে যেন স্বাবলম্বী হয় সেই উদ্দেশ্যে কাজ করছি।
- সরকারি চাকরিজীবীদের শ্বশুর-শাশুড়িও চিকিৎসা পাবেন!
- স্বৈরাচার-স্বেচ্ছাচারিতার পতন অনিবার্য : মির্জা ফখরুল
একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আদর্শগ্রাম প্রকল্প হিসেবে গুচ্ছগ্রাম তৈরি করেছিলেন। আমরা আশ্রয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। সেখানে মালিকেরা সমবায় করে মালিকানা ভোগ করবে। কেউ অহেতুক যেন বাড়ি ও জমি বিক্রি করতে না পারে সেই ব্যবস্থাও নিয়েছি। একটি মানুষও যেন গৃহহীন না থাকে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। নদীভাঙা মানুষ যেন গৃহহারা না হয়ে যায় সেজন্য ১০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ আছে তাদের সহযোগিতার জন্য। আমাদের দেশের মাটি উর্বর, জমি উর্বর, মানুষ কাজের। তাদের কাজে লাগাতে পারলে কষ্ট হয় না। যে কারণে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছে।