ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের হুগলি বিলের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তারের জেরে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৩ পুলিশসহ ১৫ জন আহত হয়েছে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ৫০ রাউন্ড ফাকা গুলি ছোড়ে।
আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের বুল্লা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে এএসআই মোশারফ হোসেন, এএসআই ওয়াদুদ ও পুলিশ সদস্য সাইফুলসহ অন্যান্যরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়।
স্থানীয়রা জানান , জেলা প্রশাসন থেকে বুল্লা গ্রামের ‘হুগলি বিল’ বুল্লা বড় উঠান মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ইজারা নিয়ে গ্রামটির সাবেক মেম্বার ফুল মিয়া ও তার ছেলে বর্তমান মেম্বার কাওছার মিয়ার কাছে কিছু দিন আগে পুনরায় ইজারা দেন । তবে তারা ইজারা নিয়ে বিলে মাছ ধরতে গিয়ে পার্শবর্তী পাইকপারা, হাজীপুর, হাতুরা পাড়া গ্রামের ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমিতে বাধ নির্মাণ করতে গেলে পাইকপাড়া গ্রামের কাসেম মেম্বার ও রাজু সরদারের নেতৃত্বে একদল লোক বাধা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝগড়ার খবর পেয়ে বিজয়নগর থানার ওসি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দিলে বুল্লার সাবেক মেম্বার ফুল ইসলাম ও কাওছার মেম্বারের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়তে থাকে এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালালে ৩ পুলিশসহ ১৫ জন আহত হয়।
তারা বলেন, পুলিশ যথাসময়ে উপস্থিত হওয়ায় বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটেনি। এসময় স্থানীয়রা থানার ওসির সাহসী ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজিম নোমান মত ও পথকে বলেন, কিছুদিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের মালিকানাধীন ২৪ একর ‘হুগলি বিল’ বুল্লা বড় উঠান মৎস্য জীবী সমবায় সমিতির কাছে ইজারা দেয়। তবে মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি হিরালাল দাস ও সাধারন সম্পাদক নারায়ন দাস বেআইনিভাবে পুনরায় বুল্লার সাবেক মেম্বার ফুল মিয়া ও তার ছেলে বর্তমান মেম্বার কাউছারের নিকট ইজারা দিলে তারা পার্শবর্তী পাইকপারা, হাজীপুর, হাতুরা পাড়া গ্রামের ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমিতে অবৈধভাবে বাধ নির্মাণ করতে যায়। তখন পাইকপাড়া গ্রামের কাসেম মেম্বার ও রাজু সরদারের নেতৃত্বে একদল লোক বাধা দেয়।
নোমান বলেন, অবৈধভাবে বিল দখলকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ে একাধিক বৈঠক করি। তবে আজ শনিবার সকাল ১০ টার দিকে বুল্লা গ্রামের মসজিদের মাইকে সাবেক মেম্বার ফুল ইসলাম ও কাওছার মেম্বারের লোকজন পাইকপড়া, হাজীপুর, হাতুরা পাড়া গ্রামে হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়ে প্রায় এক হাজার মানুষকে একত্রিত করে। খবর পেয়ে আমি ফোর্স নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়। আমাদের অনুরোধে পাইকপাড়া গ্রামের কাসেম মেম্বার ও রাজু সরদারের নেতৃত্বে একদল বিলে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকে। কিন্তু ফুল মিয়ার নেতৃত্বাধীন গ্রুপটি বাধা অমান্য করে অতর্কিত হামলা চালালে পুলিশ জনগনের সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাঠিচার্জ ও ৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এতে আমাদের ৩ পুলিশ সদস্য আহত হযেছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে এবং এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।