ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ স্টেশনের ক্রসিংয়ে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও ঢাকাগামী আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার মধ্যে সংঘর্ষে ১৬ জনের মৃত্যু একটি মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি। এই ট্র্যাজেডিতে আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন অর্ধশত মানুষ। নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ। আমরা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। পাশাপাশি তাদের পরিবারের প্রতিও গভীর শোক ও সমবেনা জ্ঞাপন করছি।
স্টেশন কর্তৃপক্ষের মতে, মন্দবাগ রেল স্টেশনে দাঁড়ানোর জন্য এই সিগন্যাল দেওয়া হয়। ওই সিগন্যালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস প্রধান লেন থেকে ১ নম্বর লাইনে যেতে শুরু করে। ট্রেনটির ছয়টি বগি ১ নম্বর লাইনে উঠতে পেরেছিল। অন্য বগিগুলো প্রধান লেনে থাকা অবস্থায় তূর্ণা নিশীথা সিগন্যাল অমান্য করে। এতে তূর্ণা নিশীথার একাধিক বগি ওই ট্রেনের কয়েকটি বগির ওপর উঠে যায়। এতে উদয়নের তিনটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়।
এদিকে ঘন কুয়াশার কারণেই সিগন্যাল দেখতে পাননি বলে রেলওয়ের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন তূর্ণা নিশীথার চালক তাহের উদ্দিন। ইতোমধ্যে ট্রেনটির চালক, সহকারী চালক ও গার্ডকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা মনে করি, চালকের অধিকতর প্রশিক্ষণ না থাকাটাই এই দুর্ঘটনার কারণ।রেলে যারা কাজ করেন এসব বিষয়ে তারা আরও সতর্ক থাকলে থাকলে হয়তো এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যেত।
পণ্য পরিবহন, মানুষ পরিবহন সবক্ষেত্রেই রেল অত্যন্ত নিরাপদ যোগাযোগ মাধ্যম। এ কথা অনস্বীকার্য যে, রেলপথের উন্নয়নে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় রেলের বহরে নতুন নতুন ট্রেন ও লাইনের সংযোজন ঘটছে। আমরা মনে করি, রেলপথের উন্নয়নের পাশাপাশি রেলের নিরাপত্তা বৃদ্ধিটাও জরুরি। আর এজন্য রেলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের অধিকতর প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। রেলপথকে আরও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে শেখ হাসিনা সরকার শিগগিরই এই উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এটিই আমাদের প্রত্যাশা।
- আরও পড়ুন >> আবেগাপ্লুত ও কৃতজ্ঞ