মুসলমানদের টার্গেট করেই আসামের এনআরসি : মার্কিন প্রতিবেদন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মুসলমানদের টার্গেট করেই আসামের এনআরসি
ছবি : আরব নিউজ

আসামে চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু এবং মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন করে তোলার’ একটি হাতিয়ার। এতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বেছে বেছে মুসলমানদের টার্গেট করা হয়েছে। ভারত সরকার তাদের রাষ্ট্রহীন করতে এনআরসি তালিকাকে হাতিয়ার করছে।

আসামের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মার্কিন কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)।

universel cardiac hospital

ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডমের শুক্রবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়।

‘ইস্যু ব্রিফ: ইন্ডিয়া’ নামের ওই রিপোর্টে সংস্থাটি জানিয়েছে, এনআরসির মাধ্যমে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং বিশেষত এর দ্বারা ভারতীয় মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন করে তোলা এর অন্যতম উদ্দেশ্য। ভারতের অভ্যন্তরে ধর্মীয় স্বাধীনতার অবস্থার নিম্নমুখী প্রবণতার এটি একটি বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নীতি বিশ্লেষক হ্যারিসন একিন্সের তদারিকতে ওই রিপোর্টটি তৈরি করেছে ইউএসসিআইআরএফ।

এতে আরও হয়, ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার যে ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছে, সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিতাড়ন করার এই প্রচেষ্টাই তার অন্যতম উদাহরণ। আগস্ট মাসে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর বিজেপি সরকার এমন কিছু পদক্ষেপ করেছে, তাতে তাদের মুসলিম বিরোধী মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে।

মুসলিমদের বাদ দিয়ে হিন্দু এবং বাছাই করা কিছু সংখ্যালঘুদের সুবিধা করে দিতেই যে নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় পরীক্ষার আয়োজন, বিজেপির ইঙ্গিতেই তা স্পষ্ট।

ইউএসসিআইআরএফ জানিয়েছে, বিজেপি ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য একটি ধর্মীয় পরীক্ষা তৈরির লক্ষ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে যাতে হিন্দুরা এবং কিছু ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বেঁচে যাবে ঠিকই, তবে বাদ পড়বেন মুসলমানরা।

বিষয়টি নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে এর আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই যাবতীয় কাজকর্ম হচ্ছে বলে একাধিকবার দাবি করেছে মোদি সরকার।

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রথম খসড়া প্রকাশ করা হয়। সেখানে মাত্র এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের ঠাঁই হয়। অথচ আবেদন করেছিল তিন কোটি ২৯ লাখ মানুষ।

এরপর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে ১৯ লাখ লোককে রাষ্ট্রহীন ঘোষণা করা হয়েছে। নাগরিকত্বের সঠিক প্রমাণ দিতে না পারলে এসব লোকের জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে।

রাষ্ট্রহীন হিন্দুদের ভারতের নাগরিকত্ব দিতে পার্লামেন্টের আগামী অধিবেশনে একটি নাগরিকত্ব সংশোধন বিল উঠানোর পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। কিন্তু দেশটিতে বসবাস করা কয়েক কোটি মুসলমানের জন্য এমন কোনো আশ্বাস নেই।

মুসলমানদের আশঙ্কা, রাজ্যটিতে জাতীয় নাগরিকত্ব তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসলমানকে রাষ্ট্রহীন ঘোষণা করতে পারে ক্ষমতাসীন মোদি সরকার।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে