রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে দুই ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আন্তঃনগর তূর্ণা-নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমাস্টার (চালক), সহকারী লোকোমাস্টার ও গার্ড দায়ী।
আজ বুধবার বিকালে রাজধানীর রেলভবনে ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ ও ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
গত ১২ নভেম্বর ঢাকা-চট্টগ্রাম লাইনের মন্দবাগ স্টেশনের আউটার ক্রসিংয়ে রাত পৌনে ৩টার দিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ১৭ জন নিহত হন।
এ দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে পাঁচটি কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে জেলা প্রশাসন একটি, বাংলাদেশ রেলওয়ে তিনটি এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে।
এর মধ্যে তিনটি কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, এসব প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তঃনগর ৭৪১ নম্বর তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার ও গার্ড সিগন্যালগুলো যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ না করে ট্রেন পরিচালনার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
রেলমন্ত্রী বলেন, সিগন্যাল অমান্য করায় সংঘটিত এই দুর্ঘটনার জন্য কমিটিগুলো কর্তৃক তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমাস্টার তাছের উদ্দিন, সহকারী লোকোমাস্টার অপু দে এবং গার্ড আব্দুর রহমানকে দায়ী করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনার আগে চালক যে সময় পেয়েছেন, চাইলে তিনি ট্রেন থামাতে পারতেন। কিন্তু তিনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্রেক প্রয়োগ করেননি।
কমিটিগুলো ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য কিছু সুপারিশ করেছে বলে জানান মন্ত্রী। সেগুলো হলো—
১. ট্রেনের লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার ও গার্ডের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকির জন্য লোকোমোটিভ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা;
২. ট্রেনের অপারেশনের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;
৩. ট্রেনের অপারেশনের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের শূন্য পদ পূরণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া;
৪. স্টেশন ও ট্রেনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য ক্লোজ ইউজার গ্রুপের মোবাইল ফোন অথবা আধুনিক অন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা এবং
৫. বাংলাদেশ রেলওয়েতে এটিএস (অটোমেটিক ট্রেন স্টপ) ব্যবস্থা প্রবর্তন করা।
এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে বলে কমিটিগুলো আশা প্রকাশ করেছে।