ব্যাটিং দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, বাংলাদেশ কি টেস্ট খেলছে, ওয়ানডে খেলছে নাকি টি-টোয়েন্টি খেলছে! আসলে বাংলাদেশের খেলাটাই আজ গুবলেট হয়ে গেছে! একটি ঐতিহাসিক ম্যাচে এমন ভয়াবহ ব্যাটিং (!) দিবা-রাত্রির টেস্টের আমেজটাই নষ্ট করে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ৩০.৩ ওভারে মাত্র ১০৬ রানে অল-আউট হয়েছে। সর্বোচ্চ ২৯ রান করেছেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আহত হয়ে মাঠ ছাড়া লিটন দাসের (২৪)। বাংলাদেশের ৮ ব্যাটসম্যান দুই অংক ছুঁতে পারেননি।
দিবা-রাত্রির টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২৬ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। যাদের মধ্যে ৩ জনই ‘ডাক’ মেরে ফিরেন! শুরুতেই জীবন পান ইমরুল কায়েস। ইশান্ত শর্মার বলে তাকে কট বিহাইন্ড দিয়েছিলেন আম্পায়ার জোয়েল উইলসন। রিভিউ নিয়ে বাঁচেন তিনি। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। সেই ইশান্ত শর্মার বলেই এলবিডাব্লিউ হয়ে যান মাত্র ৪ রান করা অভিজ্ঞ এই ওপেনার। এরপর ইমরুলের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন বাকী ব্যাটসম্যানরা।
অধিনায়ক মুমিনুল হক ৭ বল খেলে কোনো রান না করেই উমেশ যাদবের বলে রোহিত শর্মার তালুবন্দি হন। মোহাম্মদ মিঠুন ২ বল খেলে সেই উমেশ যাদবের বলেই ‘ডাক’ মেরে ফিরেন। সবচেয়ে আশ্চর্যের হলো মুশফিকুর রহিমের আউট হওয়া। নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটসম্যান আজ ০ রানে পেসার মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হয়ে যান! এ যেন ‘ডাক’ মারার মিছিল!
একপ্রান্ত আগলে লড়তে থাকা সাদমান ইসলাম চলতি সিরিজের তিন ইনিংসে প্রথমবার দুই অংকে পা রাখেন। দলীয় ৩৮ রানে উমেশ যাদবের শিকার হন ২৯ রানে। অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ যোগ দেন প্যাভিলিয়নে ফেরার মিছিলে। মাত্র ৬ রানে পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম এই সদস্য আউট হলে ৬০ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লাঞ্চের আগে লিটন দাস (২৪*) রানে আহত হয়ে ফিরলে ষোলকলা পূর্ণ হয় বাংলাদেশের।
এভাবেই স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। মধ্যাহ্ণ বিরতির পর এবাদত হোসেনকে (১) বোল্ড করে দেন ইশান্ত শর্মা। স্পিন অল-রাউন্ডার হিসেবে পরিচিত মেহেদী হাসান মিরাজ ইশান্ত শর্মার চতুর্থ শিকার হন মাত্র ৮ রান করে। দলের সংগ্রহ তখন ৯৮ রান। মোহাম্মদ শামির বলে নাঈম হাসান (১৯) আউট হতেই মাত্র ৩০.৩ ওভারে ১০৬ রানে অল-আউট হয় বাংলাদেশ। ২২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন ইশান্ত শর্মা। উমেশ যাদব নিয়েছেন ৩টি আর ২টি নিয়েছেন মোহাম্মদ শামি।
বাংলাদেশ একাদশ: ইমরুল কায়েস, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, নাঈম হাসান, আবু জায়েদ চৌধুরি, ইবাদত হোসেন, আল আমিন হোসেন।
ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, চেতেশ্বর পুজারা, বিরাট কোহলি, অজিঙ্কা রাহানে, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋদ্ধিমান সাহা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব।