রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের অপপ্রচারের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয় মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক অপ্রচার বন্ধ করতে হবে।
সেখানে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের নিয়ে অব্যাহত মনগড়া তথ্য দেয়া, তথ্যের অপব্যবহার, অসমর্থনযোগ্য দাবি এবং অযৌক্তিক অভিযোগ করা অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সংকটকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশের ওপর স্থানান্তর করতে মিয়ানমার সরকার রাখাইনে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ এবং জন্মভূমিতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না নিতে অপপ্রচার চালাচ্ছে মিয়ানমার।
বিবৃতিতে বলা হয়, এক সংবাদ সম্মেলনে (গত ১৫ নভেম্বর ) মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সম্পূর্ণরূপে অসহযোগিতা এবং দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থাকে অকার্যকর করতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উদ্যোগ নিয়েছে। এমনকি তারা নৃশংসতায় জড়িতদের জবাবদিহিতা প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাম্প্রতিক উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, এই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারে একের পর এক শাসন ব্যবস্থা কর্তৃক নিয়মতান্ত্রিক বঞ্চনা ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বর নির্যাতনের ফল। যার সূত্রপাত মিয়ানমারে। আর সমাধানও করতে হবে মিয়ানমার থেকেই।
বাংলাদেশের প্রত্যাবাসন বিলম্বিত করার কোনো আগ্রহ নেই। বরং দ্রুততম সময়ে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ আন্তরিক।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, অতীতে হতাশাব্যঞ্জক অভিজ্ঞতা এবং আরও বড় চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ফের মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে জড়িত হয়েছে, প্রত্যাবাসনের সময় দু’টি অধ্যায় শেষ করেছে। দ্বিপক্ষীয় উপকরণ অনুসারে রাখাইনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা, সুরক্ষা, নাগরিকত্ব, চলাফেরার স্বাধীনতা, মৌলিক সেবা ও জীবিকা নির্বাহসহ মূল কারণগুলির মোকাবিলায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও পুনরায় শুরু করতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করায় মিয়ানমারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। রোহিঙ্গারা তাদের উৎস স্থান বা তাদের পছন্দের যেকোনো নিকটতম জায়গায় ফিরে যাক। তদুপরি, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের যথাযথ পদ্ধতিতে স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে উৎসাহিত করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব মিয়ানমারের।
বিবৃতিতে আরও বলায় হয়, দুর্ভাগ্যক্রমে মিয়ানমার তার দায়বদ্ধতা পালনের জন্য কোনো রাজনৈতিক ইচ্ছা প্রদর্শন করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। মিয়ানমার মুষ্টিমেয় সংখ্যক লোকের ফিরে যাওয়ার দাবি করছে, যা যাচাই করা হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত আগস্টে প্রত্যাবাসন প্রয়াস চলাকালে মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে রোহিঙ্গারা বিশ্ব গণমাধ্যমকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল যে, নিরাপত্তা, সুরক্ষার আশ্বাস পেলেই রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় তাদের জন্মভূমিতে ফিরে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা পোষণ করে।