নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে দুর্ভোগে যাত্রীরা

ডেস্ক রিপোর্ট

নৌযান
ফাইল ছবি

নৌযান শ্রমিকরা নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধসহ ১১ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে কর্মবিরতি (ধর্মঘট) শুরু করেছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীরা।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এ কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। কর্মবিরতির ফলে যাত্রী, পণ্য ও জ্বালানিবাহীসহ দেশের সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ। এতে নৌপথে যোগাযোগে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মত ও পথের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

universel cardiac hospital

বরিশাল : নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে বরিশাল নদী বন্দরে শনিবার (৩০ নভেম্বর) ভোর থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এ কারণে সকাল থেকে বরিশাল নদী বন্দরে এসে ফিরে যান যাত্রীরা। পণ্য পরিবহন ও খালাস বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদেরও পড়তে হয়েছে দুর্ভোগে। ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকেই যাত্রীবাহী লঞ্চ পন্টুন থেকে সরিয়ে মাঝ নদীতে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে।

কর্মবিরতি উপেক্ষা করে ওয়াটার বাস গ্রীনলাইন চলাচল করছে। সকালে যাত্রী নিয়ে বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে গ্রীনলাইন ছেড়ে গেছে। এছাড়া কম দূরত্বের অনেক যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার কিংবা স্পিডবোটযোগে গন্তব্যের উদ্দ্যেশে রওনা দেন। অনেকে আবার দীর্ঘক্ষণ নদী বন্দরে অপেক্ষার পর ফিরে যান।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক মাস্টার একিন আলী জানান, শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি পালন করছেন। এ কারণে সকাল থেকে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে পণ্যবাহী নৌযানও চলছে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল নৌ নিরাপত্তা শাখার উপ-পরিচালক ও বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু গণমাধ্যমকে বলেন, কর্মবিরতি প্রত্যাহারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।

খুলনা : নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে খুলনাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে খুলনা ও মোংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। নৌপরিবহন ধর্মঘটের দোহাই দিয়ে বাজারে নিত্যপণ্যের দামও বেড়েছে। খুলনা বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চঘাট থেকে শনিবার কোনো নৌযান চলাচল করেনি। মোংলা বন্দর থেকে যশোরের নওয়াপাড়া বাণিজ্য কেন্দ্র পর্যন্ত কোথাও কোনো নৌযান চলেনি। ফলে এসব ঘাটে ছোট-বড় সহস্রাধিক নৌযান নোঙ্গর ফেলে পণ্য ওঠানামার জন্য অবস্থান করছে।

জানা গেছে, খুলনা ও যশোরের নওয়াপাড়ার কার্গোবার্জ থেকে পণ্য নেয়ার জন্য শত শত ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকলেও নৌযান শ্রমিকরা কাজ না করায় শিল্প নগরী খুলনা ও মোংলা বন্দরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ধর্মঘটের ফলে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য বন্দরের জেটিতে আনা নেয়া এবং বন্দর থেকে নদীপথে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে পরিবহন বন্ধ রয়েছে।

এদিকে নিত্যপণ্যের বাজারেও এ ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে। মালামাল আনা নেয়া হচ্ছে না এমন অজুহাত দেখিয়ে আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্যের দাম কেজিপ্রতি আরও ৫ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি করেন ব্যবসায়ীরা।

পটুয়াখালী : সারাদেশের মতো পটুয়াখালীতেও নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে। শনিবার সকাল থেকে পটুয়াখালী নদী বন্দর থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। অভ্যন্তরীণ সব রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

চাঁদপুর : নৌ ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে চাঁদপুর লঞ্চঘাট। চাঁদপুর থেকে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, শরীয়তপুরসহ সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। যাত্রীরা বিকল্প পথে বাসে যাতায়াত করছেন।

রাজবাড়ী : সারাদেশে নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারীদের কর্মবিরতি চললেও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। শনিবার (৩০ নভেম্বর) ভোর থেকে এ রুটে অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবে ফেরি, লঞ্চসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল করতে দেখা গেছে।

দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের সুপারভাইজার মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানান, সারাদেশে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট চললেও দৌলতদিয়ায় কোনো ধর্মঘট নেই। স্বাভাবিকভাবে লঞ্চে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে