সাক্ষী রাত ১০টায় এলেও সাক্ষ্যগ্রহণের তাগিদ প্রধান বিচারপতির

মত ও পথ প্রতিবেদক

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। ফাইল ছবি

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, আদালতে সময়ের ব্যাপারে কোনো কম্প্রোমাইজ (আপস) করা হবে না। আদালতের সময় যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। আদালতে থাকলেই কাজ করতে হবে।

শনিবার বিকেলে জাতীয় বিচারবিভাগীয় সম্মেলনে সারাদেশ থেকে আসা বিচারকদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরাও বক্তব্য রাখেন।

অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, অনেক সময় সাক্ষী কোর্টে এসে ফেরত যান। বিচারকদের বলব- এখন থেকে কোনো সাক্ষী হাজিরা দিলে রাত ১০টা হলেও সাক্ষ্যগ্রহণ করে তাকে ছাড়বেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর বিচারকরা কীভাবে কাজ করছেন তা দেখলাম। বেলা আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে ১১ জন জেলা জজকে টেলিফোন করলাম। তার মধ্যে নয়জনকে পেলাম চেম্বারে। জিজ্ঞাসা করলাম চেম্বারে কী করেন? জবাবে বললেন, স্যার এইমাত্র কোর্ট থেকে নেমেছি।

তিনি বলেন, কোর্টের সময়টা হলো পাবলিক সময়। এটা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে।

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, জুডিশিয়াল অফিসাররা আমার সঙ্গে থাকেন। একজন বললেন- ঢাকার একজন সহকারী জজ এত ব্যস্ত- তাকে অবশ্যই কোর্টে পাবেন। আমি ফোন দিলাম তাকে। তিনি জানালেন, স্যার আমিতো চেম্বারে, এইমাত্র নেমেছি। তাই আমি সবাইকে বলছি, দিস ইজ পাবলিক টাইম। এটা কাজে লাগাতে হবে।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আমরা আপিল বিভাগের বিচারকরা সকাল ৯টায় কোর্টে বসি। এক মিনিট সময় নষ্ট করি না। আমি বলব- আপিল বিভাগের বিচারকরা যদি সময়মতো কোর্ট বসেন এবং নামেন, তাহলে অন্য কোর্টের জজরা কেন পারবেন না। এটা শক্তভাবে অনুসরণ করতে হবে।

আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জামিন শুনানি নিয়ে আমি হিমশিম খাচ্ছি। বিকেল বেলা আইনজীবীরা কোর্টে থাকতে চান না। বিশেষ করে বেলা ২টার পর উনারা বাসায় চলে যেতে চান। তাই জামিন আবেদনগুলো শুনানি হবে ২টার পর। আর বিচারকার্যক্রম হবে সকাল থেকে। জামিন আবেদনের শুনানি যদি রাত ১০টায়ও করেন দেখবেন কোর্টভর্তি আইনজীবী।

তিনি বলেন, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় হাজার হাজার মামলা জমে যাচ্ছে। এখন থেকে আরও কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ নারী ও শিশুনির্যাতন কোর্টেও সকালবেলা জামিন পিটিশন শুনানি হয়।

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আমি চেম্বার জজ থাকাকালে সিনিয়র আইনজীবী টিএইচ খানকে দেখেছি ৯৫ বছরেও বিকেল ৪টায় কোর্টে আসতেন। সুতরাং বয়স কোনো ফ্যাক্টর নয়। কারণ বয়স বেশি হলে বেশি কাজ হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে