রুম্পা হত্যা: বিচার দাবিতে উত্তাল স্টামফোর্ড

মত ও পথ প্রতিবেদক

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের বিচার দাবিতে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে তৃতীয় দিনের মতো চলছে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি।

আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধেশ্বরী শাখার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন।

universel cardiac hospital

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, রুম্পাকে হত্যা করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে এই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, রুম্পা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। কিন্তু ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও হত্যারহস্যের কূলকিনারা করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, এ হত্যার সঙ্গে জড়িত যারা, তাদের যেন দ্রুত আইনের আওতায় আনা হয়; পাশাপাশি এ আন্দোলন প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। যাতে শিক্ষার্থী ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

মানববন্ধনে রুম্পার সহপাঠীরা বলেন, আর যেন কোনো রুম্পাকে এভাবে মরতে দেখা না যায়। এ হত্যাকাণ্ডের একমাত্র বিচার মৃত্যুদণ্ড। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলেই আমরা রক্ষা পাব, না হলে এ রকম নির্মম হত্যাকাণ্ড চলতেই থাকবে। অন্য কোনো ইস্যুতে যেন রুম্পা হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা না পড়ে সেদিকে নজর দিতে হবে।

স্টামফোর্ডের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক জেরিন বলেন, আমরা আর কোনো শিক্ষার্থীকে এভাবে হারাতে চাইনা। রুপা হত্যার সঠিক তদন্ত করে তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

একই বিভাগের শিক্ষক সালমা বলেন, আমরা স্টামফোর্ড পরিবার ও ইংরেজি বিভাগ রুম্পা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও এই হত্যার রহস্য উৎঘাটনের দাবি জানাচ্ছি।

এর আগে শনিবারও বিক্ষোভ করেন স্টামফোর্ডের শিক্ষার্থীরা। এদিন দেশের বেশ কয়েকটি ক্যাম্পাসে রুম্পা হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডে রুম্পার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ পাওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছিল– আশপাশের কোনো ভবন থেকে পড়ে যাওয়াই তার মৃত্যুর কারণ।

রুম্পা বেসরকারি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষে পড়তেন। মালিবাগের শান্তিবাগে মা ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন ভাড়া বাসায়। চাকরির কারণে তার বাবা রোকনউদ্দিন হবিগঞ্জে থাকেন।

রুম্পার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন ওই থানার এসআই আবুল খায়ের।

প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধানে তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যার পর রুম্পা বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। সঙ্গে নিজের মোবাইল ফোনটিও নেননি তিনি। উঁচু থেকে পড়ে শরীরের যে ধরনের জখম হয়, রুম্পার শরীরে সে ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

পুলিশ বলছে, রুম্পাকে সিদ্ধেশ্বরীর কোনো একটি ভবন থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ধারণা করা হচ্ছে– রুম্পা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

রুম্পার মৃত্যুর বিষয়টি এখনও পুরোপুরি পরিষ্কার নয় পুলিশের কাছে। এ জন্য ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছেন তারা। এমনটি জানিয়েছেন রমনার ওসি মনিরুল।

তিনি বলেন, এটি হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে হত্যা মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে বিষয়টি। এ ঘটনায় রুম্পার এক সহপাঠীকে আটক করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে