জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন মানবাধিকার হরণকারীদের ডাকাত আখ্যা দিয়ে বলেছেন, যারা মানবাধিকার হরণ করে তারাই বড় ডাকাত। তাদের চেয়ে বড় ডাকাত আর কেউ হতে পারে না।
এসব ডাকাতের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান প্রবীণ এই রাজনীতিক।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদ ‘বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
কামাল হোসেন বলেন, যে মানবাধিকারের জন্য ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান ও স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে, সেই মানবতাকে প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রতিটি গ্রামগঞ্জে এ মানবাধিকার আদায়ের বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।
ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক বলেন, আমরা তো পরাধীন নই। সংবিধান অনুযায়ী আমরা স্বাধীন দেশের মালিক। স্বাধীন দেশের মালিক হয়ে আমাদের যে অধিকার সেই অধিকারগুলো এক মুহূর্তের জন্য আমরা হারাতে পারি না। যারা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, কথা বলার অধিকার আমাদের দিয়ে গেছেন, সেই অধিকার আমাদের নেই- এটা মনে করে তাদের সঙ্গে বেইমানি করতে পারি না।
কামাল বলেন, বাঙালি জাতি অন্যায় মেনে নেয়ার জাতি নয়। পাকিস্তান বুঝতে পারেনি, তার জন্য তাদের মাশুল দিতে হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের অনেক স্বৈরশাসক বুঝতে পারেনি, তাদেরও মাশুল দিতে হয়েছে। এখনো যদি কেউ মনে করে অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় থাকবে তারা থাকতে পারবে না। এই বাঙালি জাতি থাকতে দেবে না।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই সংবিধানপ্রণেতা বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। গণতন্ত্রের অর্থ হলো দেশের জনগণের অধিকার। সেই অধিকার যদি কেউ অন্যায়ভাবে হরণ করার চেষ্টা করে, তার মানে এই নয় যে, আমরা অধিকার হারিয়ে ফেলেছি। কেউ যদি অন্যায়ভাবে অধিকার হরণের চেষ্টা করে, তাহলে সেটাই হলো সবচেয়ে বড় ক্রাইম। এই ক্রাইমকে ধ্বংস করে আমাদের সেই অধিকার পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ড. কামাল বলেন, যারা মানবাধিকার হরণ করে, মানুষের অধিকার হরণ করে, তারা মহাঅপরাধী। তাদের আইনের আওতায় আনতে হলে ঐক্য প্রয়োজন। ঐক্যবদ্ধ হয়েই তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
সংগঠনের চেয়ারম্যান মো. নুরুল হুদা মিলু চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, সাবেক মন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. মোফাজ্জল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।