সম্প্রতি পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর বাতিল ও স্থগিতের পর এবার যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠকও পিছিয়েছে বাংলাদেশ। আজ থেকে দিল্লিতে দুই দিনের বৈঠকটি শুরুর কথা ছিল।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভারত ছয়টি অভিন্ন নদীর রূপরেখা চুক্তি সইয়ের জন্য প্রাথমিক কাজ শেষ করেছে। পানিবণ্টন চুক্তি সইয়ের লক্ষ্যে দুই দেশ এসব নদীর তথ্য–উপাত্ত ২৪ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো হালনাগাদ করেছে। এ নিয়ে আলোচনার জন্য আজ বুধবার থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বৈঠক শুরুর কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা পিছিয়ে গেছে।
ঢাকায় যৌথ নদী কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জেআরসির প্রস্তাবিত বৈঠকের প্রথম দিনে যৌথ কমিটির ও দ্বিতীয় দিন কারিগরি কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
এ বিষয়ে জেআরসির এক সদস্য বলেন, দিল্লিতে বুধবার থেকে প্রস্তাবিত বৈঠকটি স্থগিত হয়ে গেছে। দুই পক্ষ আলোচনা করে বৈঠকের পরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে।
দুই দেশের সচিব পর্যায়ের পূর্বনির্ধারিত ওই বৈঠকে মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরী ও দুধকুমার— এ ছয়টি নদীর হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ের কথা ছিল ঢাকা ও দিল্লির।
- কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে বিতর্কিত ৩২ নেতাকে অব্যাহতি
- ভারতে তথ্য পাচারের অভিযোগে পুলিশ সদস্য গ্রেফতার
যৌথ নদী কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারত ১৯৮৫ সালে প্রথমবারের মতো মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরী ও দুধকুমার নদীর প্রবাহ একে অন্যের সঙ্গে বিনিময় করেছিল। তখন থেকেই দক্ষিণ এশিয়ার দুই নিকট প্রতিবেশী এসব নদীর পানি ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ১৯৯৫ সালে শেষবারের মতো দুই দেশ নদীর পানিপ্রবাহের সর্বশেষ তথ্য বিনিময় করেছিল।
জানা গেছে, আগস্টের বৈঠকের পর ২০১৮ সাল পর্যন্ত নদীর পানির বিভিন্ন তথ্য–উপাত্ত বিনিময়ের জন্য চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ। ভারতও একই ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বাংলাদেশকে জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুকনো মৌসুমে উজানে অর্থাৎ ভারত পানি প্রত্যাহার করে বলে দুই দেশের অভিন্ন নদীগুলোর বাংলাদেশ অংশে পানি যথেষ্ট কমে যায়। বর্ষায় পরিস্থিতি হয় উল্টো। বাংলাদেশের নদীগুলোতে অতিরিক্ত পানি থাকে। তখন উজান থেকে পানি ছাড়ার পরিণতিতে বাংলাদেশে বন্যা দেখা দেয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। এর মধ্যে শুধু গঙ্গার পানি বণ্টনের জন্য ১৯৯৬ সালে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি সই হয়। জানা গেছে, এ বছরের শুকনো মৌসুমের প্রথম দুই মাস অর্থাৎ জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির চেয়ে ৬৮ হাজার কিউসেক পানি কম পেয়েছে। যদিও এপ্রিল ও মে মাসে বাংলাদেশ চুক্তিতে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি পানি পেয়েছে।