ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আইনটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত এক সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে দাখিল হওয়া অর্ধশতাধিক আবেদন নিয়ে আজ শুনানির পর আগামী ২২ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
ভারতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ ওই আইনের প্রয়োগ স্থগিত রাখার আবেদন আপাতত খারিজ করে দিয়ে বলেছেন, আগামী ২২ জানুয়ারি আইনটি স্থগিত রাখার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করে প্রায় ৬০টি আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে।
পিটিশন যারা দাখিল করেছেন তাদের মধ্যে কংগ্রেস, ইন্ডিয়ান মুসলিম লীগ, তৃণমূল কংগ্রেস, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আসামে ক্ষমতাসীন বিজেপির শরিক ‘অসম’ গণপরিষদও রয়েছে। আইনটি পাস হওয়ার পর গত এক সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে এসব পিটিশন দাখিল হয়।
ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ আজ এসব পিটিশনের শুনানি করেন। সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যে বেঞ্চে থাকা অপর দুই বিচারপতি হলেন বি আর গাভাই ও সূর্য কান্ত।
মোদি সরকারের নতুন নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের আগে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে যে সব অমুসলিম ‘ধর্মীয় নিপীড়নের’ শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তারা এবার ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সুপ্রিম কোর্টে যারা পিটিশন দাখিল করেছেন তাদের দাবি, ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদান করা সংক্রান্ত নতুন এই আইন ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের পরিপন্থী। যা সংবিধানের মুলনীতির সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এর মাধ্যমে মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সমতা লঙ্ঘিত হবে, যা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার।
- সীমান্ত রক্ষায় পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন: বিজিবিকে প্রধানমন্ত্রী
- রাজাকার তালিকা সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী: কাদের
পিটিশন দাখিলকারীরা আরও বলছেন, নতুন এই আইনের মাধ্যমে জাতির ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা বলছেন, সরকারকে দেশের সকল নাগরিকের সব রকম ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি সমান সম্মান জানাতে হবে। কিন্তু এই আইন সর্বজনীন ধর্মনিরপেক্ষতার ওই নীতিকে লঙ্ঘন করে ধর্মীয়ভাবে দেশকে মেরুকরণ করবে।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সংসদের উভয়কক্ষে পাস হওয়া বিলটিতে স্বাক্ষর করলে তা আইনে পরিণত হয়। তারপর থেকেই উত্তরপূর্ব ভারত, পশ্চিমবঙ্গ এবং দিল্লিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ সহিংসতায় রুপ নিলে আসামে অন্তত ছয়জনের প্রাণহানিও ঘটেছে।