মেয়াদ শেষে আর নতুন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন না করার আভাস দিয়েছেন রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লামির পুতিন।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ম্যারাথন এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন পুতিন। চার ঘণ্টা ২৫ মিনিটের দীর্ঘ ওই সংবাদ সম্মেলনে অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এক সময়কার সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নের বর্তমান নেতা। এর আগে পুতিন এত দীর্ঘ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেননি।
রাশিয়ার রাজনৈতিক প্রথা অনুযায়ী, বছর শেষে দেশটির নেতারা এক সংবাদ সম্মেলন করেন। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন রুশ প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন পুতিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। অনেক রুশ তখন জানত না কে এই পুতিন। কয়েক মাস পর ইয়েলৎসিন অনেকটা নাটকীয়ভাবে পুতিনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্থলাভিষিক্ত করেন।
তারপর প্রায় দুই দশক ধরে পুতিন রাশিয়ার নেতা। ২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া পুতিনের প্রেসিডেন্ট পদে থাকা না থাকা নিয়ে খোদ রাশিয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা রকম গুঞ্জন চলছে। কালকের সংবাদ সম্মেলনে প্রায় ১ হাজার ৮০০ সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন, প্রশ্ন করলেন রুটি-মাখনের মতো আঞ্চলিক ইস্যুতে কিন্তু পুতিন প্রশ্নের জবাব দিলেন পরিসংখ্যানে।
বাল্টিক সাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিস্তৃত বিশাল এই দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রুটি-মাখন নিয়ে আলোচনার কথা থাকলেও বেশি আলোচিত হলো পুতিন যখন ইঙ্গিত দিলেন, তিনি সংবিধানের একটি ধারা থেকে ‘ধারাবাহিক’ শব্দটি সরিয়ে দেয়ার পক্ষে, যাতে করে কেউ দুই মেয়াদে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন।
পুতিন ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট থাকার পর এক চালাকি করেন। সংবিধান সংশোধন করে তিনি প্রেসিডেন্টের চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বাড়িয়ে ওই বছর রুশ প্রধানমন্ত্রী হন। প্রেসিডেন্ট করেন দিমিত্রি মেদভেদেভকে। তারপর ২০১২ ও ২০১৮ সালে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হন, তার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালে।
তবে গতকাল পুতিন বললেন, ‘আপনাদের এই অনুগত ভৃত্য পরপর দুটি পদে দায়িত্ব পালন করে পদত্যাগও করেছিল। তারপর আবার প্রেসিডেন্টের পদে ফিরে আসার সাংবিধানিক অধিকার পেয়েছিল। তবে আমাদের কিছু রাজনৈতিক বিজ্ঞানী ও কর্মী এটা পছন্দ করেন না, তাই সম্ভবত এটি অপসারণ করা যেতে পারে।’
রাশিয়ার প্রখ্যাত ব্রডকাস্ট কোম্পানি আরটি’র এডিটর ইন চিফ মার্গারিটা সিমোনান এই সংবাদ সম্মেলনের পর এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘দেশপ্রধান (পুতিন) আরও একবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা যদি কারও এই বিষয় নিয়ে সামান্যতম সন্দেহও থেকে থাকে, তাহলে আমি তাদের বলতে চাই তিনি অংশ (নির্বাচনে) নেবেন না।’