নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঘোষিত তাফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে। তফসিল ঘোষণার পর পরই প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তবে এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন স্মরণ করে দিয়েছে ঢাকা সিটি নির্বাচনে যোগ্য ও অযোগ্যতার আইনটি।
আজ সোমবার নির্বাচন কমিশনের জারি করা এক পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন-২০০৯ এর ৯ ধারায় মেয়র ও কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা সংক্রান্ত বিধান রয়েছে।
উল্লেখিত ধারা-উপধারার বিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য অনুপযুক্ত হবেন- যদি তিনি কোনো ফৌজদারি বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছর কারদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়।
সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি যদি আপিল করেন আর আপিল বিভাগ যদি তার সাজা স্থগিত না করেন তাও তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। আর তিনি জামিনে থাকলেও নির্বাচন করতে পারবেন না। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট সাজা স্থগিত বা মওকুফ না হলে তিনি নির্বাচনের অযোগ্য হবেন।
এছাড়া প্রজাতন্ত্রের বা সিটি কর্পোরেশনের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের বা অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোনো লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত থাকেন তাহলে তিনি নির্বাচনের অযোগ্য হবেন।
হাইকোর্টের এক রায়ে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদটি লাভজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই এ নির্বাচনে অংশ নিতে হলে ঢাকার দুই মেয়রকে পদত্যাগ করতে হবে। তবে কাউন্সিলরদের পদ সার্বক্ষণিক লাভজনক পদ নন। এ জন্য এ নির্বাচনে তারা আবারও প্রার্থী হলে তাদের পদত্যাগ করতে হবে না।
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ৩০ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২ জানুয়ারি এবং প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ জানুয়ারি।
এবার দুই সিটি নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রেই ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।
জানা যায়, বিদ্যমান ভোটার তালিকা দিয়েই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সম্প্রতি দুই সিটির সম্প্রসারিত ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ডের সংরক্ষিতসহ ৪৮ জন কাউন্সিলর জানুয়ারিতে নির্বাচন না করতে কমিশনে আবেদন করেছিলেন। তারা হুমকি দিয়েছিলেন যে, তাদের আসনে নির্বাচন করলে উচ্চ আদালতে যাবেন। তবে ইসির নির্ধারিত সময়ে ওইসব ওয়ার্ডেও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। এসব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনের আগে ও পরে পৃথক পৃথকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রথম ধাপে ৪৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। তারা আজ সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবেন। ৪৩ জনের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরশনে ১৮ জন ও দক্ষিণে ২৫ জন দায়িত্ব পালন করবেন।