ঝাড়খণ্ডে পরাজয়ের পর দুশ্চিন্তায় বিজেপি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অমিত শাহ- মোদি
অমিত শাহ- মোদি

ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনে ফলাফল বির্যয়ের পরই পরই দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিজেপি শিবিরে। এই পরাজয়ে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রভাব কতোটা পড়েছে, চলছে সেই বিশ্লেষণ।

আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ঝাড়খণ্ড রাজ্যে বিজেপির ‘রাম-ধরা’ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোনো কোনো গণমাধ্যমে ‘ফিকে গেরুয়া’র কথা বলা হয়েছে, কোথাও বলা হয়েছে বিজেপি-শাসন ‘সঙ্কুচিত’ হওয়ার কথা।

universel cardiac hospital

২০১৮ সালের মার্চে ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রে গেরুয়া রঙের প্রাধান্য দেখা গেলেও চলতি বছরে সেই মানচিত্রের অনেকাংশ থেকেই উধাও গেরুয়া বর্ণ। গত এক বছরে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ড- এই পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে হেরেছেন নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ধীরে ধীরে সারা ভারতেই শক্তি হারাচ্ছে মোদি-শাহের ‘পদ্ম-বাহিনী’।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে আজ মঙ্গলবার বলা হয়, মাত্র সাত মাস আগে ২০১৪ সালের চেয়ে বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কেন্দ্রে সরকার গড়ে বিজেপি। পরবর্তীতে, রাজ্যগুলোর বিধানসভা নির্বাচনে দলটির জয়-জয়কারের পূর্বাভাষ দিয়েছিলেন অনেকে। দলের নেতারা ভেবেছিলেন মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতা ধরে রাখা কঠিন কিছু হবে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এর আগে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিসগড়ে কংগ্রেস ক্ষমতা দখল করায় বেশ খানিকটা চিন্তায় পড়েছিলো বিজেপি। তারপর মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা হারিয়ে বেসামাল হয়ে পড়ে বিজেপি।

শেষ মুহূর্তে হরিয়ানায় কোনোরকমে গদি বাঁচাতে পারলেও ঝাড়খণ্ডে এসে হোঁচট খেয়েছে মোদি-শাহের দল। গতকাল প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, ঝাড়খণ্ডে ৮১ আসনের মধ্যে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও কংগ্রেস জোট পেয়েছে ৪৭টি আসন আর ক্ষমতাসীন বিজেপি পেয়েছে ২৫টি। রাজ্যটিতে বিজেপির কমেছে ১২টি আসন।

দিল্লি নিয়ে দুশ্চিন্তা

গতকাল ঝাড়খণ্ড হারানোর পর এবার দিল্লির বিধানসভা নিয়ে বিজেপি বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছে। পাঁচ বছর আগে আম আদমি পার্টির হাত থেকে দিল্লির শাসনক্ষমতা নেওয়ার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেলেও সফল হয়নি।

নতুন বছরেই দিল্লিতে নির্বাচন। সেখানে প্রচারণায় গিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, দেশজুড়ে এনআরসি করার কোনো পরিকল্পনা নেই। সেই সঙ্গে তিনি দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমানদের আশ্বস্ত করে বলেছিলেন যে সিএএ নিয়ে মুসলমানদের দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।

কিন্তু, দিল্লিতে এনআরসি ও সিএএ’র বিরোধিতাকারীদের পুলিশ যেভাবে পিটিয়েছে তাতে কেউই মোদির কথায় নিশ্চিন্ত হতে পারেন না বলে বিভিন্ন সংবাদ বিশ্লেষণে বলা হয়। এছাড়াও, আম আদমি সরকারের বিনা খরচে পানি, গরিবদের জন্য ক্লিনিক, ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং মহিলাদের সরকারি বাসের ভাড়া মওকুফ করার সিদ্ধান্তগুলো যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছে বলে গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

তাই, আসন্ন নির্বাচনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কাছে বিজেপির নাজেহাল হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছেন না বিজেপির শীর্ষ নেতারাও।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে, “ঝাড়খণ্ডেই যখন এই পরিস্থিতি, তখন দিল্লি তো শুরু থেকেই প্রতিকূল।”

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে