মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে এমন উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ড গ্রহণযোগ্য নয়

সম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের চেতনার বাতিঘর। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার মধ্যেই আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত নির্ধারিত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একটি বিষয় বেশ মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তা হলো- কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের ব্যবহার। বিশেষ করে কিছু অপশক্তি নানা স্বার্থ হাসিল করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের ব্যনার ব্যবহার করে। এমনই একটি সংগঠনের নাম ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’। সংগঠনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর বাইরে নানা অপকর্ম জড়িয়ে এখন আলোচনার শীর্ষে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই সংগঠনের ব্যানারে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ডাকসু ভবনে ভিপির কক্ষে আলো নিভিয়ে রড ও বাঁশ দিয়ে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক ও অন্যদের হামলা করে আবার সামনে এসেছে ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’। সংগঠনটির নেতাকর্মীদের হামলায় ভিপি নুরুলসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে গুরুতর আহত হন অন্তত চারজন। এ ঘটনার পর ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

সংগঠনটির নেতাকর্মীরা আইন হাতে তুলে নিয়ে একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি করছে। গত কয়েকটি উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ডের পর এরা কারা, কেন বারবার হামলা করা সত্ত্বেও এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এমন প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। সংগঠনটির সঙ্গে কারা জড়িত, ক্ষমতাসীন দল বা তাদের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক আছে কি না? কেন বারবার হামলা করা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না-এমন প্রশ্নও এখন জনমনে।

আমরা মনে করি- মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে এমন উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ইতোমধ্যে সংগঠনটির বির্তকিত কর্মকাণ্ডে বিশিষ্টজনরাও হতাশ। এমন-কি মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে করা এ সংগঠনটির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুক্তিযোদ্ধারাও। আমরা আশা করব- আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সর্বস্তরের মানুষের উচিত মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহারকারী সংগঠনগুলির দিকে তীক্ষ্ণ নজদারি রাখা। একই সঙ্গে সরকারেরও উচিত যে কোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়া। কেননা আমাদের মনে রাখতে হবে- জাতির ঐক্যের মূলস্রোত মুক্তিযুদ্ধের অন্তর্নিহিত চেতনার মধ্যে লুকায়িত। সেই চেতনার নাম করে নামসর্বস্ব সংগঠনগুলো যখন বির্তকিত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে তখন আমাদের চেতনা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। নানা প্রশ্নের সুযোগ তৈরি হয়। যা প্রকারান্তে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলোর রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে ওঠে।এটা কোনোভাবেই হতে দেয়া যায় না। আমরা আশা করব- মুক্তিযুদ্ধের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যেন অপকর্ম করার সুযোগ কোনোভাবেই না পায়। এবং একই সঙ্গে সবার মধ্যে শুভবোধের চেতনা জাগ্রত হোক এই প্রত্যাশা। জয় বাংলা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে