আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি তোফায়েল আহমেদ ডাকসুর নির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুরসহ তার সহযোগীদের ওপর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীদের হামলার সমালোচনা করেছেন। এই হামলাকে ছাত্রসমাজের জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করেন সাবেক এই মন্ত্রী।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলায় একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তোফায়েল আহমেদ। ভোলার বাংলাবাজারে এনআরবিসি ব্যাংকের ৭৪তম শাখা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।
গত রোববার দুপুরে ডাকসু কার্যালয়ে ভিপি নুরসহ তার সহযোগী প্রায় ৩০ জনের ওপর হামলা চালায় মুক্তিযুদ্ধের মঞ্চ নামের একটি সংগঠন। হামলায় আহত কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এখনো নুরসহ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৪ জন।
এই ঘটনার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, এটা অন্যায় ও গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রধানন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। একজন ডাকসুর ভিপির গায়ে হাত তোলা সমস্ত ছাত্র সমাজের জন্য কলঙ্ক।
সাবেক এই ডাকসু ভিপি স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমরা যখন ছাত্ররাজনীতি করতাম তখন আমাদের মত ও পথের ভিন্নতা ছিল। তারপরেও আমরা একটেবিলে বসে ৬৯ সালে ৪ জানুয়ারি ১১ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করেছিলাম।
প্রবীণ এই নেতা বলেন, ডাকসুর ভিপি যখন কেউ হয়, সে তখন সবার নির্বাচিত নেতা। সেই ডাকসু অফিসে ডুকে নুরুর ওপর যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে এটা অমানবিক। আমাদের ছাত্রজীবনে এমন করে এনএসএফ ডাকসু অফিসে আক্রমণ করেছিল। কিন্তু সেই আইয়ুব খান-এনএসএফ’র পতন হয়েছে। সেই শিক্ষা কেউ গ্রহণ করে না।
৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এর সমালোচনা করে তোফায়েল বলেন, বিজয়ের মাসে গণতন্ত্র হত্যাকারীরাই গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করে। তাদের ধিক্কার দেয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই। যেই দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তারা করছে গণতন্ত্র হত্যা দিবস। অথচ তারা (বিএনপি) গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ছয়টি আসন পেয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক রয়েছেন, যাদের দলীয় প্রধান অর্থ আত্মসাতের কারণে জেলে, তাদের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে জড়িত এবং সামরিক শাসনের মধ্যে দল গঠন করেছে তারা আবার গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করে!
দেশের অগ্রগতির প্রশংসা করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, যে বাংলাদেশকে একসময় বলা হতো দরিদ্র দেশের মডেল। সেই দেশকে এখন বলা হয় বিস্ময়কর উত্থান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতেত্বে দেশ এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ব্যাংকের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, ড. নুরনবী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু, পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সার ও জেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব প্রমুখ।