অবশেষে বহু বিতর্ক ও সমালোচনার জন্ম দেয়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) মহাপরিচালক (ডিজি) সামীম মোহাম্মদ আফজাল বিদায় হলেন।
আজ সোমবার তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হয়েছে। অতিরিক্ত দায়িত্বে একজন মহাপরিচালকও নিয়োগ দিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
অতিরিক্ত দায়িত্বে ইফার মহাপরিচালক নিয়োগ পেয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার। সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে আদেশ জারি করা হয়।
আদেশে বলা হয়েছে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংস্থা) মু. আ. হামিদ জমাদ্দারকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে আর্থিক ক্ষমতাসহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হলো।
সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সামীম আফজাল ২০০৯ সালে প্রথম ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক নিয়োগ পান। ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যান তিনি। ওই সময় পিআরএল বাতিল করে এক বছরের চুক্তিতে ডিজি নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি। এরপর তার চুক্তির মেয়ার আরও দুই বছর বাড়ে।
দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগসহ নানা কর্মকাণ্ডের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনে প্রায় এক যুগের কর্মকালে সামীম আফজাল ছিলেন বিতর্কিত ও সমালোচিত। ইমাম সম্মেলনে নৃত্য পরিবেশন করে তিনি সর্বাধিক সমালোচিত হন।
গত জুন মাসে বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) একজন পরিচালককে বরখাস্ত করায় ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে (ডিজি) কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
দীর্ঘদিন ধরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সামীম আফজালের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। গত কয়েক মাস আগে তা চরম আকার ধারণ করে, স্থবির হয়ে পড়ে ফাউন্ডেশন।
সম্প্রতি বাংলাদেশে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের অধীন সিভিল অডিট অধিদফতরের এক বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে ৯০০ কোটি টাকা ‘নয়ছয়’র অভিযোগ আনা হয়। বিশেষ করে কোরআনুল করিম কম ছাপিয়ে ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ, জঙ্গিবাদের কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়ন না করে সোয়া ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ, রাতেরবেলা পরীক্ষা নিয়ে এবং জাল সার্টিফিকেট দিয়ে নিকটাত্মীয়দের চাকরি দেয়াসহ দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে।