যানজট নিরসনে রাজধানীতে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ চলছে। ২০১৬ সালের ২৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন। ওই সময় বলা হয়, ঢাকার উত্তরা থেকে মেট্রোরেলের বদৌলতে ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলে পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ৩৮ মিনিট।
সেই মেট্রোরেলের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। আশা করা হচ্ছে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের বর্ষে অর্থাৎ ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
মেট্রোরেল চালুর আগেই এর শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিতের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। পুলিশের আগ্রহে এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ের গ্রিন সিগন্যাল পাবার পর মেট্রোরেল পরিচালনা, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য আলাদা একটি নতুন ফোর্স গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
‘এমআরটি পুলিশ’ নামে একটি সাংগঠনিক কাঠামোর প্রস্তাবনা প্রস্তুতের পর তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদরদফতর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানির (ডিএমটিসিএল) আওতায় রাজধানীতে নির্মাণাধীন মাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি- মেট্রোরেল) প্রকল্প। এর নির্মাণ, শৃঙ্খলা ও পরিচালনার জন্য পৃথক এমআরটি পুলিশ ফোর্স গঠন করতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এর প্রয়োজনীয়তা নেই বলে জানানো হয়।
তবে গত ১৬ সেপ্টেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এমআরটি বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি সংক্রান্ত পর্যালোচনা সভার কার্যবিবরণীতে নতুন পুলিশের এ ইউনিট গঠনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সদরদফতরকে বলা হয়।
এরপর পুলিশ সদরদফতর থেকে এমআরটি ব্যবস্থাপনার স্বার্থে পুলিশের একটি সাংগঠনিক কাঠামোতে স্বতন্ত্র এমআরটি পুলিশ গঠনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামত পাঠানো হয়।
পুলিশ সদরদফতর সূত্রে জানা গেছে, এমআরটি পুলিশ ফোর্স নামে পুলিশের একটি নতুন ইউনিট গঠনের লক্ষ্যে ৮০৯ জনের একটি জনবলের চাহিদার তালিকা পাঠানো হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এএসপি সুদীপ্ত সরকার মত ও পথকে বলেন, এমআরটি পুলিশের জন্য ৮০৯ জনের একটি সাংগঠনিক কাঠামোর তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সদরদফতরের দেয়া তথ্য মতে, এমআরটি পুলিশের জন্য একজন উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), একজন অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি), তিনজন পুলিশ সুপার (এসপি), পাঁচজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি), সাতজন এএসপি, ৩২ জন পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর- নিরস্ত্র), চার পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর- সশস্ত্র), একজন টিআই (ট্রাফিক ইন্সপেক্টর), ২০৭ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই- নিরস্ত্র) ও ১১ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই-সশস্ত্র), এএসআই ও কনস্টেবলসহ ৮০৯টি পদ নতুন করে সৃজনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ৯৬টি যানবাহনের প্রস্তাবও করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এমআরটি পুলিশ’ ইউনিট গঠনের জন্য একটা ফাইল এসেছে। সেটা যাচাই-বাছাই চলছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ‘এমআরটি পুলিশ’-এর একটি জনবল কাঠামোর অনুমোদন চেয়ে ফাইল এসেছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।