যে সকল সরকারি কর্মকর্তাকে ১৫০ দিনের বেশি বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে রাখা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে স্বপদে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে ১৫০ দিনের বেশি ওএসডি রাখা অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া এক রায়ে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে ১৫০ দিনের চেয়ে বেশি সময় ধরে ওএসডি থাকা কর্মকর্তাদের পুনর্বহালসহ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে একজন সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার জন্য জনপ্রশাসন সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই কমিটির প্রতিবেদন রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দিয়েছেন। সাবেক সচিব এম আসাফ উদ্দৌলাহর করা এক রিট আবেদনের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় দেন আদালত। আদালতে রিট আবেদনকারীপক্ষে ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
ওএসডি রাখার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্চ এবং এবিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা চেয়ে ২০১২ সালের ৩১ মে রিট আবেদন করেন আসাফ উদ্দৌলাহ।
এ রিট আবেদনে হাইকোর্ট ওই বছরের ৪ জুন রুল জারি করেন। এই রুলের ওপর শুনানি শেষে রায় দিলেন আদালত।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, যেসব কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে তারা সবাই দেশের নাগরিক হিসেবে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই সরকারি চাকরি পেয়েছেন। তাদের কেন ওএসডি করা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ রাষ্ট্রপক্ষ দেখাতে পারেনি।
রায়ে বলা হয়েছে, ওএসডি থাকাবস্থায় কোনো কোনো কর্মকর্তার মারা গেছেন। রায়ে বলা হয়, ওএসডি কর্মকর্তারা কেবল অফিসে যান আর বাসায় থাকেন। কোনো কাজ করেন না। জনগণের করের টাকায় কাজ না করেও বেতন পান। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তারা সামাজিকভাবে হীনমন্যতায় ভোগেন। এমনকি ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতে যেয়ে সমস্যায় পড়েন।
সর্বনিম্ন ৪৫ দিন এবং সর্বোচ্চ ১৫০ দিন ওএসডি রাখার বিধান করে ১৯৯১ সালের ৩ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। এই প্রজ্ঞাপনের বিধান অমান্য করে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশিদিন ওএসডি রাখায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।