পুঁজিবাজারে বড় পতন

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

শেয়ারবাজার
ফাইল ছবি

মূলত একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর গত বছরের শুরুর দিকে কিছুদিন চাঙ্গা ছিল দেশের দুই পুঁজিবাজার। ঊর্ধ্বগামী মূল্যসূচক ৫৮০০ পয়েন্টে উঠেছিল। লেনদেনও হয়েছে হাজার কোটির টাকার কাছাকাছি। এরপর বাজার যে নিম্নমুখী হয়েছে, তা আজ সোমবার সাম্প্রতিক সময়ের বড় পতনের মধ্য দিয়ে নেমে এসেছে সাড়ে চার বছর আগের অবস্থানে।

মাঝে গত বছরের জুনের দিকে নতুন অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সামনে রেখে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশাবাদের বুদবুদ উঠেছিল যে, হয়তো বাজেটে প্রণোদনা ঘোষিত হলে বাজার ফিরে পাবে তার গতি। কিন্তু বাজারবান্ধব কিছু প্রণোদনা এলেও তা কাজে লাগেনি মোটেই। বরং এরপর বাজারের নিম্নমুখিতা ত্বরান্বিত হয়। বাজেট ঘোষণার পর থেকে এ পর‌্যন্ত প্রায় ১০০০ পয়েন্টের বেশি মূল্যসূচক পড়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে।

universel cardiac hospital

গত সপ্তাহটি টানা বড় পতন দেখেছে দেশের দুই বাজার। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিনটি সামান্য উত্থান দিয়ে শুরু হলেও দ্বিতীয় দিন আজ  সোমবার সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় পতন দেখল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, আজ সোমবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৮৮ পয়েন্ট এবং সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৪৫ পয়েন্ট, যা ২ শতাংশের বেশি।

ডিএসইর মূল্যসূচক আজ  নেমে এসেছে ৪১২৩ পয়েন্টে, যা গত চার বছর আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৫ সালের ৭ মে ৪ হাজার ১২২ পয়েন্টে অবস্থান করছিল সূচক।

আজ এই বাজারের অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ২০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯২৯ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৮৭ পয়েন্টে।

ডিএসইতে আজ লেনদেন হয়েছে ২৮৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার, যা আগের দিনের চেয়ে ২৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বেশি। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২১টির, কমেছে ৩১৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টি কোম্পানির শেয়ার দর।

ডিএসইতে আজ লেনদেনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হলো লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, এডিএন টেলিকম লিমিটেড, রিং শাইন টেক্সটাইল লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, বিকন ফার্মা, ওয়েস্টার্ন লিমিটেড শিপইয়ার্ড লিমিটেড, নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড, স্টান্ডার্ড সিরামিকস, গ্রামীণফোন ও এস এস স্টিল লিমিটেড।

দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশটি কোম্পানি হলো ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক লিমিটেড, ইবিএলএনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, রেনেটা, নাভানা সিএনজি, বিবিএস, বিকন ফার্মা, ফোনেক্স ফাইন্যান্স ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ভ্যানগার্ড এএমএলবিডি ফাইন্যান্স মিউচুয়াল ফান্ড, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড ও গ্রীন ডেল্টা।

দরপতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো এস এস স্টিল লিমিটেড, এমারেল্ড ওয়েল, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, তুংঘাই, রিং শাইন টেক্সটাইল লিমিটেড, এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড, ফাস ফাইন্যান্স, বিচ হ্যাচারি, প্রভাতি ইনস্যুরেন্স ও সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৪৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১২ হাজার ৫৬৩ পয়েন্টে। দর বেড়েছে ২৮টির, কমেছে ২০৬টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টি কোম্পানির শেয়ার দর। এই বাজারে এদিন ১৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে