বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন বর্তমান নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ ব্যর্থ ও অযোগ্য। তাদের অযোগ্যতার কারণেই ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের তারিখ করে আবার তা পেছাতে হয়েছে।
আজ রোববার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এ সময় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থীসহ বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে একেবারেই ব্যর্থ এবং অযোগ্য। এর প্রমাণ হচ্ছে সিটি নির্বাচনের তারিখ তারা নির্ধারণ করে রেখেছিল, সেদিন ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা। বড় সমস্যা হচ্ছে যেখানে নির্বাচনী কেন্দ্রগুলো হয় সেখানেই পূজা হয়। এতে করে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারতো। কিন্তু এসব চিন্তা না করে তারা তারিখ নির্ধারণ করে। নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতার কারণেই এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়।’
ফখরুল বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একজন ক্ষণজন্মা মানুষ ছিলেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে একটি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের। আমরা যখন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মদিবস পালন করছি, তখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে একটা মিথ্যাবাদী আওয়ামী লীগ সরকার কারাগারে আটকে রেখেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিদেশে নির্বাসিত করে রেখেছে। লক্ষ লক্ষ বিএনপির নেতাকর্মীকে তারা মিথ্যা মামলা দিয়েছে, হত্যা করেছে, গ্রেপ্তার করেছে, গুম করেছে, খুন করেছে। দেশটাকে একটা অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে তারা।’
তিনিল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা তৈরি করতে চায়। সেজন্যই তারা অত্যাচার নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে। আজকে আমরা এখানে শপথ নিয়েছি যেকোনো ত্যাগের বিনিময়ে এই দেশকে এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করব। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো এবং জিয়াউর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব।’
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর থেকে দেশের সব গণতান্ত্রিক স্তরকে সংকুচিত করে ফেলেছে। স্পেসগুলো বন্ধ করে দিয়েছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। গত জাতীয় নির্বাচনে ৩০ তারিখের নির্বাচন ২৯ তারিখ করে নিয়েছে তারা। আজকে এই ঢাকা সিটি নির্বাচনে একটি দলের প্রার্থীরা বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে, কারণ একটি অযোগ্য নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিতে সক্ষম নয়। এবং তাদের সেই যোগ্যতা নেই।’
ইভিএমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ইভিএমে নির্বাচন করার মানে হচ্ছে বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়ার আরেকটা অপকৌশল। জনগণের রায় কখনো ইভিএমের মাধ্যমে জনগণের সামনে আসবে না। ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে একটা ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থা। পৃথিবীর কোনো দেশেই এই ব্যবস্থাকে ত্রুটিহীন সিস্টেম বলা যায় না। ব্যালটের মাধ্যমে যদি ভোট দেয়া হয় সেটাই জনগণের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা। জনগণ ভোট দিলে চুরি-ডাকাতি না হলে মোটামুটি একটা ফল পাওয়া যায়। কিন্তু ইভিএমে যথেষ্ট ত্রুটি আছে ভোটের ফলাফলকে পরিবর্তন করার।’