এফডিসি কর্মকর্তার থানা হেফাজতে মৃত্যু, আছে ‘আঘাতের চিহ্ন’

মত ও পথ প্রতিবেদক

এফডিসি কর্মকর্তার থানা হেফাজতে মৃত্যু

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হওয়া আবু বক্কর সিদ্দিকী বাবুর (৪৫) গলায় কালো দাগ দেখা গেছে। এছাড়া মাথায় ও পায়ে আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গেছে।

সোমবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্ত করেন ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ।

universel cardiac hospital

কোনো আঘাতে বা কী কারণে আবু বক্কর সিদ্দিকী বাবুর মৃত্যু হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা বলতে পারেননি তিনি। উপস্থিত সাংবাদিকদের ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছ। মরদেহের গলায় কালো দাগ পাওয়া গেছে। এছাড়া তার মাথায় ও পায়ে আঘাতের চিহ্নও দেখা গেছে। তবে এ আঘাতের কারণে তার মৃত্যু, তেমনটি হওয়ার নয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা মরদেহ থেকে আলামত সংগ্রহ করে ঢামেকের হিস্টোপ্যাথলজি বিভাগে পাঠাব। সেখান থেকে রিপোর্ট আসলে পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হবে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না।

এদিকে, গ্রেফতার আসামির থানা হেফাজতে মৃত্যুর দায় পুলিশ এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। আজ সোমবার ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ফুল দেয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।

এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, রোববার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামির মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ মৃত্যু আত্মহত্যা বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গতকাল রোববার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় পুলিশের হেফাজতে আবু বক্কর সিদ্দিক (৪৫) নামে এক আসামির মৃত্যু হয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়া এবং ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে এক নারী মামলা করার পর শনিবার তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ওই রাতেই ‘থানা হাজতে গলায় ফাঁস দিয়ে আবু বক্কর আত্মহত্যা করেছেন’ বলে দাবি করে পুলিশ। তবে আবু বক্করের পরিবারের দাবি, তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রোববার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এক নারী বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তাকে গ্রেফতার করে হাজতে আনলে তিনি আত্মহত্যা করেন। আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে।

থানা হেফাজতে সহকর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেন এফডিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারা বাবুর মৃত্যুর সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করেন।

সোমবার সকাল ১০টায় এফডিসির মূল ফটকের সামনে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত এফডিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা হিমাদ্রি বড়ুয়া বলেন, আমরা আমাদের সহকর্মীর রহস্যময় মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত চাই। সেই দাবিতেই আমরা সবাই এক হয়েছি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে