চুল কাটা বা বাউলদের প্রতি যেকোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাউল ঐতিহ্য যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, একজন বাউলশিল্পীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এখানে বাউল গানের তো কোনো দোষ নেই। বাউল গানে সম্পৃক্ত কেউ যদি কোনো অপরাধে সম্পৃক্ত হন, তাহলেও আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। আইন অনুযায়ী অপরাধের বিচার হবে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে আইসিটি মামলায় টাঙ্গাইলের বাউলশিল্পী শরিয়ত বয়াতির গ্রেফতারের বিষয়ে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, প্রশ্নকর্তা কি এমন কোনো গ্যারান্টি দিতে পারবেন- বাউল গান করছেন বলেই ওই শিল্পী কোনো অপরাধে জড়িত নন। নিশ্চয়ই তিনি এমন কোনো অপরাধ করেছেন, যার জন্য তার বিরুদ্ধে এমন আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এখন সরকার বাউল গানকে বিশ্ব ঐতিহ্য করার জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে। তাই অনুরোধ করব, বাউল গানে সম্পৃক্তরা যেন এমন কোনো কাজ না করেন, যাতে বিশ্ব ঐতিহ্য বাউল গান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
এর আগে রাজবাড়ীর পাংশার বাউল সম্প্রদায়ের চুল কেটে দেয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তর-পরবর্তী সামরিক শাসকদের মতো এখনও যদি চুল কেটে দেয়ার মতো কোনো অপরাধের ঘটনা ঘটে, তাহলে সরকার সেটা দেখবে। কারণ অহেতুক চুল কাটা বা বাউলদের প্রতি যেকোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি গ্রহণযোগ্য নয়।
কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন স্থানের বাউল সম্প্রদায়ের কল্যাণে তার সরকারের পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পর সামরিক শাসকদের যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তাদের মধ্যেই এমন প্রবণতা দেখা গেছে। ক্ষমতায় এসে প্রথমেই তারা চারপাশটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে শুরু করেন। অর্থাৎ সুইপারের দায়িত্ব তারাই নিয়ে নেন।
তিনি বলেন, যারা ক্ষমতায় আসেন, তাদের কেউ টি-শার্ট পরে পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেন, কৃচ্ছ্রতা সাধনের কথা বলেন, কেউ সাইকেল চালিয়ে অফিসে যাওয়া শুরু করেন। পরে দেখা যায়, তারাই সবচেয়ে দামি গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ান, প্যারিস থেকে স্যুট নিয়ে আসেন, শিফন শাড়ি নিয়ে আসেন। মানুষের চুলকাটাসহ এসব কাজ তারাই করেছেন। অবশ্য তাদের এমন উদ্যোগ বেশিদিন টেকে না। তারপরই দেখা যায়, তারা নিজেদের আসল রূপকে প্রকাশ করে ফেলেন।