রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইসিজে বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হেগে মিয়ানমারকে ৪টি অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছেন। এগুলো হলো— মিয়ানমার হত্যাযজ্ঞের সাক্ষ্য-প্রমাণ নষ্ট করতে পারবে না, মিয়ানমারকে জেনোসাইড কনভেনশন মেনে চলতে হবে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা তৎপরতা চালানো যাবে না এবং ১২০ দিনের মধ্যে রায় বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানাতে হবে।
এটি একটি ঐতিহাসিক আদেশ। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত আইসিজের আদেশকে বিশ্বের মুক্তিকামী শান্তিপ্রিয় মানুষের বিজয়। এ আদেশে পরিলক্ষিত হয়েছে, বিশ্বের মানুষ চায় রোহিঙ্গাদের সমস্যার সমাধান হোক। এ আদেশে গাম্বিয়া, ওআইসি, রোহিঙ্গা এবং অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য এটি বড় বিজয়। ফলে গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া সহজ হবে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে রোহিঙ্গা গণহত্যার ব্যাপারে অং সান সুচির যুক্তি খারিজ করা হয়েছে। এটি প্রমাণ করে সেখানে গণহত্যা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক আদালত মিয়ানমারকে বলেছেন, জেনোসাইড যেন আর না ঘটে, এজন্য তাদেরকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর যেন খারাপ না হয়, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। গাম্বিয়া যে মামলা করেছে, এখন তার বিচারটা চলতে থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি, এবার রোহিঙ্গা সংকট কেটে যাবে।
আইসিজের চারটি অন্তর্বর্তী আদেশ রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের প্রাথমিক ধাপ। এ রায় বাস্তবায়নের জন্য নিয়মিত রিপোর্ট দিতে হবে, যা এই সমস্যা সমাধানের জন্য ইতিবাচক। এ রায় রোহিঙ্গা জনগণের জন্যও একটি বিজয়। এ রায় পরবর্তী সময়ে অন্য দেশগুলোকেও এ ধরনের অপরাধ থেকে বিরত রাখতে ভূমিকা রাখবে।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের অন্তর্বর্তী আদেশে রোহিঙ্গারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। এ আদেশকে তারা প্রাথমিক বিজয় হিসেবে দেখছেন। কারণ আইসিজের আদেশ মিয়ানমার রক্ষা করলে ২০২০ সালের মধ্যে সব রোহিঙ্গা অধিকার নিয়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবে। যে কারণে রোহিঙ্গাদের আশার প্রতিফলন ঘটেছে বলেই পত্রপত্রিকায় খবর এসেছে।
জেনেভা কনভেনশন মেনে বিচার চাওয়ায় আমরা আইসিজে ও এর সদস্যদের শুভেচ্ছা জানাই। বলা যায়, রোহিঙ্গা ইস্যুতে গাম্বিয়ার করা মামলায় জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) অন্তর্বর্তী রায়ের ফলে মিয়ানমার অবশ্যই চাপে পড়বে।
- আরও পড়ুন >> বর্তমান সরকারের সাফল্যের এক বছর
- আরও পড়ুন >> আলোর পথযাত্রী
আইসিজের ঐতিহাসিক এই আদেশ বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব জাতিসংঘের। তবে বাংলাদেশকেও এখন প্রচুর কাজ করতে হবে। বিশেষ করে এ রুলিংয়ের ইমপ্যাক্ট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে হবে। চীন, জাপান, ভারতের সঙ্গে যখন আমরা বসব, তখন বলা যাবে মিয়ানমার গণহত্যা করেছে। যেহেতু তারা মিয়ানমারের সঙ্গে রয়েছে। এ রায় আমাদের জন্য অনেক বড় জয় এই কারণে যে, এই আদেশ আমাদের পক্ষে না গেলে সংকট আরও বাড়ত।