বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে হতাশা প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্যরা। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন যারা দেশের সম্মান বয়ে আনতে পারছে না তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি না করে যারা সম্মান বয়ে আনছেন তাদের দিকে নজর দেয়া উচিত।
সোমবার পাকিস্তানের মাটিতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে ২-০ তে সিরিজ হারের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ক্রীড়াঙ্গন খুব একটা ভালো নেই। জানি না কী বিপর্যয় আমাদের ওপর দিয়ে যাচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিল-২০২০ এর ওপর জনমত যাচাই-বাছাই করার প্রস্তাব দিয়ে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা।
বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলে উল্লেখযোগ্য বিশেষ কোনো দিক নেই। কিছুদিন আগে দেখলাম ক্রীড়াঙ্গনগুলোতে ক্যাসিনো বিপ্লব চলছে। সেই ক্যাসিনো বিপ্লবে বেশ কিছু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, অভিযোগ আনা হয়েছে- এটুকুই শেষ।
তিনি বলেন, ক্রীড়াঙ্গনের অবস্থা খুব একটা ভালো নাই। যে কারণে এই বিলটি যে উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে তা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক শক্তিশালীকরণ, দৃঢ় এবং মজবুত করার জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নত মানের ক্রীড়াবিদ তৈরি করতে পারি এরকম বিল আনেন।
হারুন আরও বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলাধুলা করছে। সম্প্রতি পাকিস্তানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে, এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। ভারতেও হোয়াইটওয়াশ। জানি না কি বিপর্যয় আমাদের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে আমি মনে করি, বিকেএসপিতে আরও নজর দেন। অহেতুক উল্লেখযোগ্য উদ্দেশ্যে কারণ ছাড়াই বিল নিয়ে আসছেন।
জবাব দিতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, অনেকেই বলেছেন মাঠের অভাবে ক্রীড়াঙ্গনে উল্লেখযোগ্য উন্নতি নেই। তাদের জানাতে চাই মাঠের অভাব মেটাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রতিটি জেলা পর্যায়ে ৪৯২টি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে ১২৫টি নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১৬৭টি স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে যাচ্ছি। অচিরেই সেই কাজ শুরু করতে পারব।
তিনি বলেন, ভারতে হোয়াইটওয়াশ হয়নি। সেখানে টি-টোয়েন্টির প্রথম ম্যাচে আমরা ভারতকে পরাজিত করেছি। এছাড়া গত বছর প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করে দ্বিপাক্ষিক ট্রফি ছিনিয়ে এনেছি। আমাদের খেলোয়ারেরা অলিম্পিকে ১৯টি গোল্ডসহ ১৪২টি পদক ছিনিয়ে এনেছে। কাজেই অগ্রগতি নেই কথাটি সঠিক না।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যুব ফুটবল টিম সম্মান কুড়িয়ে আনছে। সাম্প্রতিক সময়ে অলিম্পিকে বেশ কয়েকটা আইটেমে ছেলেমেয়েরা স্বর্ণপদক জয় করে এনেছে। যেগুলো আমাদের সম্মান আনছে, যে সমস্ত ছেলেমেয়েরা পুরস্কার আনছে তাদেরকে পেট্রোনাইস করা হোক। সময় এসেছে যারা কিছু আনতে পারে বা যারা কিছু দিতে পারে, যারা সম্মান বয়ে আনতে পারে তাদের গুরুত্ব দেয়া হোক। যারা সম্মান আনতে পারে না তাদের এত গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
এরপর সংশোধনী প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, আমাদের জন্য দুঃসংবাদ। আমাদের বিসিবির প্রভাবশালী সভাপতি পারলেন না আমাদের সাকিবকে ফেরাতে। সাকিব এক বছর খেলার বাইরে থাকল এটা আমাদের বোধগম্য নয়, এর আগেও দেখেছি সভাপতি যারা ছিলেন দক্ষতার সঙ্গে চালিয়েছেন। আশা করি, এটার শাস্তির কমানোর ব্যাপারে আরেকটু পদক্ষেপ নেয়া উচিত হবে।