অপচয়, অযত্ন, অবহেলা কঠোর শাস্তির দাবি রাখে

ড. সা’দত হুসাইন

ড. সা’দত হুসাইন
ড. সা’দত হুসাইন। ফাইল ছবি

ছোটবেলা থেকে বড়দের মুখে একটি কথা শুনে আসছি, ‘কম্পানি কা মাল, দরিয়া মে ঢাল।’ আমার ধারণা, প্রায় প্রত্যেক শিক্ষিত লোক এ বাক্যটি শুনেছেন। বোঝা যাচ্ছে, বাক্যটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে রচিত হয়েছে। এখানে পুরো ব্রিটিশ শাসনকে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি হিসেবে ধরা হয়েছে। ব্রিটিশ শাসনামলে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মচারীরা নিয়োগকারী সংস্থাকে আপন বলে মনে করত না। সংস্থার প্রতি তারা নিবেদিত বা অনুগত ছিল না। সংস্থার অর্থ সাশ্রয় কিংবা সংস্থার স্বার্থ রক্ষাকে তারা গুরুত্বপূর্ণ বা অগ্রাধিকারসম্পন্ন বিষয় মনে করত না। এককথায় সরকার এবং সংস্থার সঙ্গে একাত্মতার পরিবর্তে কর্মচারীদের এক ধরনের মানসিক দূরত্ব বা বিচ্ছিন্নতাবোধ সৃষ্টি হয়েছিল।

পাকিস্তান আমলকেও (১৯৪৭-৭১) আমরা ঔপনিবেশিক শাসন হিসেবে চিহ্নিত করি। পশ্চিম পাকিস্তানিরা ১৯৪৭ সাল থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের (তৎকালীন পূর্ববঙ্গ) জনগণকে নির্লজ্জভাবে শোষণ করতে থাকে। ফলে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বৈরিতা সৃষ্টি হয়। এ অঞ্চলের লোকজন সরকারি অফিস এবং সংস্থাকে আপন মনে করেনি। ফলে আগের মতোই সরকারের অর্থ সাশ্রয় কিংবা সরকারের স্বার্থ রক্ষাকে এ দেশের জনগণ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়নি। ‘কম্পানি কা মাল দরিয়া মে ঢাল’ বাক্যটি পূর্ব পাকিস্তানি বাঙালিদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় ছিল।

universel cardiac hospital

স্বাধীন বাংলাদেশে এমনটি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু হচ্ছে। এখন সরকারি-আধাসরকারি সংস্থা, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংগঠন—সবগুলো বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান। শুধু দু-একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এর ব্যতিক্রম। এখনকার সরকারি, আধাসরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঔপনিবেশিক চরিত্র নাই। নিজ দেশের এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বৈরী ভাব থাকার কথা নয়। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা অনেক কম ছিল। মাসিক বেতনের টাকা দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হতো। সত্যি বলতে কী, একটা সময় গিয়েছে, যখন দুবেলা পেট পুরে খাওয়া সম্ভব হতো না। এর মধ্যেও কর্মকর্তা (নির্বাহী)-কর্মচারীরা নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছে। অফিস সময়ের পরও খাটাখাটুনি করে যুদ্ধবিধ্বস্তু দেশকে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছে। পর্যায়ক্রমে তার ফলোদয় হয়েছে। আজ আমরা তার সুফল দেখতে পাচ্ছি।

এখন দিন বদলেছে। দেশের সম্পদ বেড়েছে, উৎপাদন বেড়েছে, সমৃদ্ধি বেড়েছে। তৈরি পোশাক রপ্তানি, রেমিট্যান্স, কৃষিজ উৎপাদন এবং বিদেশি সাহায্যের বদৌলতে সাধারণভাবে মানুষের আয়-সম্পদ যেমন বেড়েছে, তেমনি সরকারের রাজস্বও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এ ছাড়া রয়েছে সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ গ্রহণের প্রবণতা। সব মিলিয়ে সরকার এখন বিশাল আকারের বাজেট প্রণয়ন করে। স্বাধীনতার পর বার্ষিক বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকা। এখন তা হয়েছে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। এত বিশাল বাজেটের আওতায় দেশে বহু উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা এবং মানুষের কল্যাণের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সহজ কাজ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কথা। প্রকল্প বা কর্মসূচির জন্য যে টাকা ছাড় করা হয়, সে টাকার সদ্ব্যবহার করা হবে, সাধারণ নাগরিকরা এমনটি আশা করে।

গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর থেকে দেশের মানুষ জানতে পেরেছে যে তত্ত্বাবধানের অভাবে ও দুর্নীতির কারণে প্রকল্প ও কর্মসূচিতে বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যয়িত হচ্ছে না। এর একটা বড় অংশ অপচয় হয়ে যাচ্ছে। প্রকল্প বা কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই যে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থের অপচয় করছে তা নয়। এমন অনেক নির্বাহী ও তত্ত্বাবধানকারী কর্মকর্তা রয়েছেন, যাঁরা এরূপ অপচয় সম্পর্কে মানসিকভাবে সচেতন নন। কিছু ভুল ধারণা অনেকটা স্লোগানাকারে উপস্থাপন করে তাঁদের বোঝানো হয়েছে, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা খরচ করার মধ্যে অন্যায় বা দুর্নীতি নেই। বেশি টাকা খরচ করা এরূপ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ব্যাপার।

নব্বইয়ের দশকে আমি প্রাথমিক শিক্ষাসচিব হিসেবে নিয়োজিত ছিলাম। এ সময় বিপুলসংখ্যক প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ ও সংস্কার করা হচ্ছিল। বেশির ভাগ স্কুলের নির্মাণ-সংস্কারের কাজ হচ্ছিল উন্নয়ন সহযোগী দেশ বা আন্তর্জাতিক সংস্থার আর্থিক সমর্থনে। আর্থিক সমর্থনের একটা বিরাট অংশ ছিল অনুদান (Grant)| সহযোগী দেশের সাহায্য সাধারণত অনুদানের আকারে হতো। অনুদানের একটা বড় শর্ত ছিল—নির্মাণকাজ দাতা দেশের ঠিকাদার দিয়ে সম্পন্ন করতে হবে। তবে ঠিকাদারের সঙ্গে দর-কষাকষির সুযোগ রয়েছে। অনুদান প্রদানকারী দেশগুলোর মধ্যে জাপান ছিল সবচেয়ে বড়। অনুদানের টাকায় তারা বহু স্কুল নির্মাণ বা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অসুবিধা হলো, জাপান সরকারের অনুদান ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এজেন্ট জাইকা স্কুল নির্মাণের জন্য যে প্রাক্কলিত ব্যয় উপস্থাপন করত, তা দেশীয় অর্থে নির্মিত সমমানের স্কুলের ব্যয়ের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা সাত-আট গুণ বেশি হতো। এরূপ মাত্রাতিরিক্ত উচ্চ ব্যয়ে স্কুল নির্মাণের প্রস্তাব স্বাভাবিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। এ প্রস্তাবে সম্মতি দান যে ঝুঁকিপূর্ণ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ জাইকার প্রস্তাবিত একটি স্কুলের নির্মাণ ব্যয় দিয়ে দরাজ হাতে খরচ করলেও কমপক্ষে তিনটি স্কুল নির্মাণ করা সম্ভব। আমি জাইকার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে আমার জুনিয়র সহকর্মীদের জাইকার সঙ্গে দর-কষাকষি করে প্রস্তাবিত ব্যয় কমিয়ে আনতে অনুরোধ করতাম। সহকর্মীদের ধরাবাঁধা উত্তর ছিল, ‘এটা তো স্যার অনুদানের টাকা। আমাদের তো খরচ দিতে হবে না। অতএব, ব্যয় প্রস্তাব বড় অঙ্কের হলে আমাদের তো কোনো দায় নেই। টাকা তো দেবে জাইকা। এ নিয়ে দরাদরি বা গড়িমসি করে আমাদের কী লাভ?’ তাদের বোঝাতে কষ্ট হতো যে একবার অনুদানের চুক্তি স্বাক্ষর হলে এ টাকা বাংলাদেশ সরকারের হয়ে যায়। সুতরাং নির্মাণে বেশি টাকা খরচ হলে তা আমাদের তহবিল থেকে যাবে। খরচ আমাদের খাতে দেখানো হবে। সবচেয়ে বড় কথা, দর-কষাকষির মাধ্যমে খরচ যৌক্তিকভাবে কমিয়ে আনতে পারলে অনুদানের টাকা দিয়ে আমরা আরো বেশিসংখ্যক স্কুল নির্মাণ করতে পারব।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এবং বার্ষিক আবর্তক রাজস্ব খাতের বরাদ্দ থেকে যেসব নির্মাণকাজ ও কেনাকাটা সম্পন্ন করা হয়, তার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ অপ্রয়োজনীয় কিংবা অনর্থক বলে পরবর্তীকালে বিবেচিত হয়। পত্রপত্রিকায় প্রায়ই খবর ছাপানো হয় যে কোটি কোটি টাকায় কেনা যন্ত্রপাতি বা যন্ত্রাংশ বছরের পর বছর অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। কেউ কোনো দিন ব্যবহার করার চেষ্টাও করেনি। কিছু যন্ত্রপাতি, পরিবহন কিংবা ইলেকট্রিক, ইলেকট্রনিক সামগ্রী অল্প সময় ব্যবহার করার পর নষ্ট হয়ে গেছে। সেগুলো আর মেরামত করা হয়নি অথবা মেরামতের অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। এভাবে সরকারি-আধাসরকারি সংস্থার শত শত কোটি, বলা যায় হাজার হাজার কোটি টাকা সম্পূর্ণরূপে অপচয় হয়েছে। দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা এ জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া তো দূরের কথা, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পারেনি। পুরো ব্যাপারগুলোকে সিস্টেম লস, স্বাভাবিক ঘটনা কিংবা দুর্ঘটনা হিসেবে আড়াল করা হয়েছে। দেশের এবং দেশের মানুষের যে এত বড় ক্ষতি হয়েছে, তা কর্তৃপক্ষ আমলে নেয়নি। এ ব্যাপারে তারা নির্বিকার থেকেছে। দেশের স্বার্থে এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনা অত্যাবশ্যকীয় ছিল।

অনেক নির্মাণকাজ এবং যন্ত্রপাতি-সরঞ্জামাদি যে টাকায় কেনা হচ্ছে, তা বিরাজমান বাজারদরের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। দু-এক ক্ষেত্রে এ মূল্য বাজারদরের চেয়ে কয়েক শ গুণ বেশি। বহুল আলোচিত বালিশ, পর্দা, চিকিৎসাবিষয়ক যন্ত্রসামগ্রীর দাম বিজ্ঞজন এবং সাধারণ মানুষকে স্তম্ভিত করেছে। একই ধারায় রেলওয়ে প্রকল্পে নিম্নতর কর্মচারী থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য যে বেতন স্কেল প্রস্তাব করা হয়েছিল তা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিস্মিত করেছে। বিদেশি সাহায্যপুষ্ট ঋণ প্রকল্প হলেও সরকারকে এ টাকা পরিশোধ করতে হবে। চূড়ান্ত বিবেচনায় ঋণ পরিশোধের দায় জনগণের ঘাড়ে এসে পড়বে। সরকারের রাজস্ব খাত থেকে ব্যয় বহন করা হলে তা হবে পুরোপুরিভাবে জনগণের করের টাকার একটি অংশ। বিদেশি অনুদানের টাকা হলে সেখানেও জনগণের একটা হিসসা রয়েছে। যেভাবেই বিশ্লেষণ করা হোক না কেন, মাত্রাতিরিক্ত বাড়তি দাম দিয়ে সরকারি খাতে নির্মাণ বা কেনাকাটা করা হলে জনগণের ওপর জুলুম করা হয়। তাদের কষ্টার্জিত টাকা ইচ্ছাকৃতভাবে অপচয় করা হলে তা অমার্জনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

একইভাবে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও নিজের বৈষয়িক স্বার্থসিদ্ধির জন্য যানবাহন, যন্ত্রপাতি কিংবা সরঞ্জামাদি কেনা হলে তা হয় প্রকৃতপক্ষে দেশের সম্পদ অপচয়ের নামান্তর। অথচ আমরা প্রায়ই দেখতে পাই যে কোটি কোটি টাকায় কেনা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তা মানুষের বা দেশের কোনো কাজে আসছে না। জনসাধারণের করের টাকায় এরূপ অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বা মালামাল শুধু নিজের বা স্বজনের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কেনা হলে তা জনস্বার্থের বিপক্ষে যায়। এতে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত এবং যারা এ অপরাধ করে, তাদের শাস্তির আওতায় আনা সমীচীন হবে।

অর্থনীতিতে উৎপাদন অঙ্গনে x-efficiency বলে একটি ধারণা (concept) রয়েছে। মোটা দাগে বলতে গেলে x-efficiency উৎপাদনে নিয়োজিত ব্যক্তিদের উৎসাহ, উদ্যোগ, উদ্দীপনা ও আন্তরিকতাকে বোঝায়। ব্যক্তির এসব গুণ উৎপাদনশীলতা এবং উৎপাদনকে অনেক বাড়িয়ে দেয়। পুঁজি, যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি সমান থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তি পর্যায়ের x-efficiency বলে শিল্পের সমৃদ্ধি অনেকাংশে বেড়ে যায়। একই ধারায় consumption অঙ্গনে x-efficiency-এর ধারণা প্রবর্তিত হয়েছে। এর মূল কথা হলো—যত্ন, সতর্কতা, প্রয়োগ এবং আন্তরিকতা থাকলে অনেক কম খরচে একই মানের ভোগ-সম্ভার তৈরি বা সংগ্রহ করা যায়। সরকারি, বেসরকারি সংস্থার সম্পদ ক্রয় ও সংগ্রহের ক্ষেত্রে x-efficiency-নীতি অনুসরণ করা গেলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করা যায়। অর্থাৎ সম্পদের অপচয় বাঁচানো যায়। একজন সজ্জন ও বুদ্ধিমান ব্যক্তি সে লক্ষ্যে কাজ করবেন—এটি সবাই প্রত্যাশা করে। এ ধরনের ব্যক্তি সম্মান-শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্য।

একটু সতর্কতা, আন্তরিকতা, ধৈর্য ও সংযম নিয়ে কাজ করলে আমরা পরিবার, সংগঠন কিংবা সরকারের ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনতে পারি। এবার পেঁয়াজের সংকটকালে অনেক পরিবার দেখে-শুনে পেঁয়াজ ব্যবহার করেছে। আগে যখন পেঁয়াজের দাম কম ছিল, তখন এসব পরিবার হিসাব-নিকাশ ছাড়া মাসে ১৫-২০ কেজি পেঁয়াজ খরচ করেছে। বাড়ির কর্তাব্যক্তি কোনো দিকে না তাকিয়ে এই অল্প দামের পণ্যটি কিনে দিয়েছেন। এর একাংশ কম প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহৃত হয়েছে, আর একাংশ অপচয় করা হয়েছে। দাম বাড়ার পর পেঁয়াজ ব্যবহারে সবাই সতর্ক হয়ে পড়ে। ফলত দেখা যায়, খাবারের স্বাদগত কিংবা গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে পেঁয়াজের ব্যবহার প্রায় ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। যেহেতু একবার হিসাব-নিকাশের মধ্যে এসে গেছে, তাই ভবিষ্যতেও পেঁয়াজের ব্যবহার হ্রাসকৃত পরিমাণের মধ্যে সীমিত রাখা হবে। বেশি পরিমাণ পেঁয়াজ কেনার প্রয়োজন হবে না। পরিবারের অর্থ সাশ্রয় হবে। মানসিক সপ্রতিভতা বজায় রেখে হিসাব-নিকাশ করে খরচ করলে সরকার, সংগঠন কিংবা কম্পানির ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা সম্ভবপর হয়।

যে লোক ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, কম্পানি বা সংগঠনের অর্থ-সম্পদ অপচয় করে, সে লোক নিন্দিত হওয়ার উপযোগী। তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনলে সমাজ ও দেশ উপকৃত হবে। অপচয় করা একটি অপরাধ, এ অপরাধে লিপ্ত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনলে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য তা কল্যাণকর হবে।

লেখক : সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব ও পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে