সড়ক দুর্ঘটনায় চার জেলায় নিহত ৮

মত ও পথ প্রতিবেদক

সড়ক দুর্ঘটনা
প্রতীকী ছবি

দেশের ৪ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতের বিভিন্ন সময় কক্সবাজারের চকরিয়া, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছে চকরিয়া উপজেলায়। সেখানে বাস উল্টে প্রাণ হারিয়েছেন যানটির ৪ যাত্রী। আহত হয়েছেন ২৫ জনের মতো। এছাড়া কুমিল্লায় কাভার্ডভ্যানের পেছনে বাসের ধাক্কায় দুইজন এবং লক্ষ্মীপুর ও ‍মুন্সীগঞ্জে একজন করে বাইক আরোহী নিহত হয়েছেন।

কক্সবাজার

universel cardiac hospital

শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার বানিয়ারছড়া স্টেশনে স্টার লাইন পরিবহনের একটি বাস উল্টে খাদে পড়ে নারীসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বাসটির ২৫ যাত্রী।

জানা যায়, রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল স্টার লাইন পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-২৩৪৩) একটি বাস। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার বানিয়ারছড়া স্টেশনের অদূরে পৌঁছলে যানটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে বাসটি খাদে পড়ে উল্টে গেলে ঘটনাস্থলেই চার যাত্রী নিহত ও ২৫ যাত্রী আহত হন।

চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. আনিসুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে চারজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে আনা হয়।

নিহতদের মধ্যে ঝর্ণা বেগম নামে এক নারী যাত্রীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া এলাকার মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী। বাকিদের নাম-ঠিকানা এখনও জানা যায়নি। আহতদের উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

কুমিল্লা

রাত একটার দিকে কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাভার্ডভ্যানের পেছনে এনা পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় চালকসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বাসের ১০ যাত্রী।

চৌদ্দগ্রাম মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এ কে এম শরফুদ্দিন দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাত একটার দিকে চট্টগ্রামমুখী একটি কাভার্ডভ্যান চৌদ্দগ্রাম জগন্নাথদীঘি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের ফোরলেনের ডিভাইডারের ওপর উঠে যায়। এ সময় এনা পরিবহনের একটি বাস কাভার্ডভ্যানের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থনেই কাভার্ডভ্যান চালক ও বাসের সুপারভাইজার নিহত হয়।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মিয়াবাজার হাইওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য, চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ সদস্য এবং দমকল বাহিনীর সদস্যরা বাসের আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে তাদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দুর্ঘটনায় নিহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি। তবে তারা কাভার্ডভ্যানের চালক ও এনা পরিবহনের সুপারভাইজার বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।

লক্ষ্মীপুর

গতকাল রাতে ঢাকা-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের যাদৈয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আবদুর রহিম নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন তার ছোট ভাই মানিক হোসেন।

নিহত আবদুর রহিম ও আহত মানিক সদর উপজেলার লাহারকান্দি গ্রামের ফজলুল করিমের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানায়, দুই ভাই বাইকে করে লাহারকান্দি থেকে মান্দারি যাচ্ছিলেন। যাদৈয়া এলাকায় আসার পর একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গেলে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে বাইকটির ধাক্কা লাগে। এতে দুজনই গুরুতর আহত হয়।

স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে আবদুর রহিমকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আহত মানিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

মুন্সীগঞ্জ

রাত ১১টার দিকে জেলার মুক্তারপুর সেতুর টোল প্লাজার কাছে সড়ক দুর্ঘটনায় মো. সুমন নামে বাইক আরোহী এক যুবক নিহত হয়েছেন।

সুমন নারায়ণগঞ্জের চর সৈয়দপুর গ্রামের মো. জলিলের ছেলে। তিনি ডক ইয়ার্ডের শ্রমিকের কাজ করতেন।

মুন্সিগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ দেখতে পায়। মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে মোটরসাইকেল বেপরোয়া গতিতে ধাক্কায় এই ঘটনা ঘটেছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে