থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নাখন রাচাসিমা শহরে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে অন্তত ২০ জনকে হত্যাকারী দেশটির এক সেনা সদস্য নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। থাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল রোববার সকালে ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সফল অভিযানের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে ওই সেনাসদস্য রাচাসিমা এলাকায় হঠাৎ এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করলে অন্তত ২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর পরপরই স্থানীয় একটি শপিংমলের ভেতর ঢুকে পড়েন তিনি। সে সময় শপিংমলটিতে কয়েক হাজার মানুষ ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হামলাকারীকে ধরতে যৌথ অভিযান চালায় দেশটির পুলিশ ও সেনাবাহিনী।
শনিবার রাতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল থানিয়া কিয়াৎসার্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে বলেন, আমাদের বিশ্বাস সে (হত্যাকারী) কোরাত শপিংমলের ২১ নম্বর টার্মিনালের ভেতর আছে। তবে সেখানে কাউকে জিম্মি করা হয়েছে কি-না তা নিশ্চিত নয়।
ভোর ৫টার দিকে পুলিশের মুখপাত্র কৃসানা পাত্তানাচারন বলেন, এই মুহূর্তে আমরা তাকে ধরার চেষ্টা করছি। ওই এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, হামলার কয়েক ঘণ্টা পর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা শপিংমল থেকে বেশ কয়েকজনকে বের করে আনেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, লোকজন গাড়িতে করে ওই এলাকা ছেড়ে যাচ্ছেন। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা শপিংমলটি ঘিরে রেখেছেন।
বন্দুকধারীকে থাই সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট মেজর জ্যাকাপান্থ থমা হিসেবে শনাক্ত করেছে দেশটির পুলিশ। হামলার উদ্দেশ্য এখনও জানা যায়নি। কোরাট শহরের রাচাসিমায় হামলা চালানোর আগে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি চুরি করেন থমা। পরে সেই গাড়ি নিয়ে রাচাসিমায় পৌঁছে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেন তিনি। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ছবি এবং ভিডিওতে আতঙ্কিত লোকজনকে প্রাণ বাঁচাতে ঘটনাস্থল থেকে চারদিকে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
ব্যাংকক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারী ওই সেনাসদস্য সেনাবাহিনীর একটি শিবিরে প্রথমে তার কমান্ডারকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন। ওই সময় আরও দুই সেনাসদস্যকে গুলি করে স্বয়ংক্রিয় একটি রাইফেল নিয়ে পালিয়ে যান। পরে মং জেলার শপিং মলের ২১ নম্বর টার্মিনালের দিকে যেতে যেতে গুলি বর্ষণ করেন তিনি।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এই হামলার দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করেন ওই সেনাসদস্য। শপিংমল এলাকায় হামলা শুরুর দিকে রাইফেল হাতে নিয়ে একটি সেলফি তোলেন তিনি। ফেসবুক লাইভের ক্যাপশনে লিখেন, অনেক বেশি ক্লান্ত।
এই পোস্টের কিছুক্ষণ পরই ফেসবুক লাইভ বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।